প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১০ জুলাই, ২০১৯

কুড়িগ্রাম ও বান্দরবানে বাড়ছে নদীর পানি

কুড়িগ্রামে বাড়ছে সব কটি নদ-নদীর পানি, দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। অন্যদিকে, বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে ঢাকা-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট :

কুড়িগ্রাম : বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমোর, ধরলাসহ সব কটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আগামী দু-তিন দিন জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে চর, দ্বীপচরসহ নদ-নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারী ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে (ফেরিঘাট পয়েন্ট) ৩৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পয়েছে। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে দিনভর বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনভর বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় শ্রমজীবী মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ১২ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

নদীতীরবর্তীরা জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধরলার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পাট, পটোল, বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, চলমান বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমোর নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তার ইউনিয়নের পোড়ারচর, ঝুনকারচর, পশ্চিম ভগবতীপুর, চর পার্বতীপুর, কালির আলগা, খেওয়ার আলগারসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সোমবার রাতের মধ্যে এসব এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠতে পারে বলে জানান চেয়ারম্যান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ‘বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দু-তিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। যদিও পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, তবে এভাবে বাড়তে থাকলে জেলায় বন্যা দেখা দিতে পারে।’

সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় নিজেদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো আমরা সংস্কার করেছি। ধরলার বামতীরে কিছু বাঁধ সামান্য ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, তবে সেগুলো আমরা মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।’

বান্দরবান : গতকাল সকাল থেকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুই নদী সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, জেলা-উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক আছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বড়দুয়ারা এলাকায় পানি ওঠায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।

এদিকে বান্দরবান বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঝুন্টু দাশ জানান, বান্দরবান কেরানীহাট সড়কে এক হাঁটুর ওপর পানি। তাই সকাল থেকে আমাদের বাস সার্ভিস বন্ধ রেখেছি। সড়ক থেকে পানি কিছুটা কমে গেলে আবার বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close