রোবট নিয়ে সবার মনেই কৌতূহল রয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে রোবটের ব্যবহারও বেড়ে চলেছে। কিন্তু রোবটের সঙ্গে মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ নিয়ে এক গবেষণায় নানা মনোভাব ধরা পড়েছে। রোবটের বাজার আগামী ১০ বছরে সম্ভবত তিন গুণ বেড়ে যাবে। ভবিষ্যতে প্রায়ই মানুষের সঙ্গে রোবটের দেখা-সাক্ষাৎ হবে। এমন ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মনে ভয়ভীতি হবে, নাকি আমরা সহজেই তা মেনে নেব? দেশ অনুযায়ী সম্ভবত এই মনোভাব নির্ভর করে।

মানুষ কতটা খুশি মনে অথবা বিরক্তির সঙ্গে রোবটের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান করে, তাৎসিয়া নোমুরা সেই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। একটি গবেষণার আওতায় তিনি ও তার সহকর্মীরা সাত দেশের মানুষের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন। ব্রিটেন, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মেক্সিকো, চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ গবেষণা চালানো হয়।

তাতে জানা গেল যে, আমেরিকার মানুষ রোবটদের বিষয়ে সবচেয়ে অনুকূল প্রতিক্রিয়া দেখায়। তারপরই জাপান, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, চীন ও ব্রিটেনের স্থান। কিন্তু মেক্সিকোর মানুষ এ বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। প্রো. নোমুরা বলেন, ‘মানুষ রোবটকে ভালো না মন্দ মনে করেন, সেটি শুধু দেশের ওপর নির্ভর করছে না। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যেও ফারাক দেখা যায়। জাপানে সব প্রজন্মই রোবট পছন্দ করে। আবার ব্রিটেনে শুধু তরুণ প্রজন্মের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক। বয়স্করা এটি পছন্দ করেন না। সম্ভবত নারী ও পুরুষের মধ্যেও ফারাক থাকতে পারে।’

কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, নারী পুরুষের তুলনায় রোবট সম্পর্কে অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। জাপানের মানুষ মূলত হিউম্যানয়েড রোবট বেশি পছন্দ করেন। এমনকি তাদের মধ্যে মানুষের বৈশিষ্ট্যও রয়েছে বলে তারা মনে করেন।

প্রো. নোমুরা এই মনোভাবের ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘জাপানে অ্যানিমিজম বা সর্বপ্রাণবাদ নামের একটি ধারণা চালু রয়েছে। কোনো বস্তুর মানুষের আকার থাকলেই তার মধ্যে আত্মাও রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। শুধু জাপান নয়, সব সংস্কৃতিতেই অ্যানিমিজমের রকমফের রয়েছে।’

সংবাদমাধ্যম ও পপ সংস্কৃতি রোবটের ভাবমূর্তি গড়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভূমিকা রাখে। জাপানের চলচ্চিত্র ও মাংগা কমিকসে রোবটদের মধ্যে মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন অ্যাস্ট্রো বয় নামের ক্লাসিক চরিত্র। অথবা ‘গোস্ট ইন দ্য শেল’ কাহিনির মাংগা সংস্করণে। হলিউডে ‘আইরোবট’-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে রোবটরাই আধিপত্য বিস্তার করে মানবজাতির বিনাশের চেষ্টা করে।

"