কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১২ মে, ২০১৯

নার্স তানিয়া হত্যা

হেলপারকে বাস চালাতে দিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে ড্রাইভার

কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রিমান্ডে থাকা ‘স্বর্ণলতা’ বাসের চালক নূরুজ্জামান ও হেলপার লালন মিয়া পুলিশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্যে স্বর্ণলতা পরিবহনের ওই বাসটি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাসটির তিন জায়গায় রক্তের দাগ পাওয়া গেছে।

পুলিশের কাছে চালক নূরুজ্জামান ও হেলপার লালন মিয়া স্বীকার করেছে, ধর্ষণ ও হত্যায় তারা নিজেরাসহ সরাসরি আরো একজন জড়িত ছিল। কিন্তু তৃতীয় ব্যক্তিটির নাম তদন্তের স্বার্থে পুলিশ গণমাধ্যমকে জানাতে অস্বীকৃতি জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজিতপুর থানার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলন্ত বাসের দরজা জানালা লাগিয়ে তানিয়াকে ধর্ষণ করে তারা। হেলপারকে গাড়ি চালাতে দিয়ে প্রথমে ড্রাইভার তাকে ধর্ষণ করে। এরপর আরো দুজন ধর্ষণ করে তাকে। তানিয়া নিজেকে বাঁচাতে সজোরে তাদের কিল ঘুষিও মারে। ধর্ষণের পর তানিয়াকে গলাটিপে বা অন্য কোনো উপায়ে হত্যা করতে চেয়েছিল ধর্ষণকারীরা। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে তাদের বাকবিত-া হয়। পরে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা।

সূত্র জানায়, ধর্ষণ ও হত্যার পর ধর্ষণকারীরা বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনা প্রমাণ করতে নাটক সাজিয়েছিল। ধর্ষণের পর তানিয়াকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর ধর্ষকরা নিজেরাই আবার ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে অনেক স্থানীয় মানুষও এগিয়ে আসে। কিন্তু ধর্ষকরা স্থানীয়দের জানিয়েছিল এয়ারফোনে গান শুনতে শুনতে মেয়েটি বাস থেকে পড়ে গেছে, আমরাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। তাদের কথা বিশ্বাসও করেছিল স্থানীরা। পরে অচেতন অবস্থায় তানিয়াকে পিরিজপুর বাজারের সততা ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ফার্মেসি থেকে মেয়েটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার কথা বললে স্বর্ণলতা বাসের স্টাফ আল আল আমিন ও রফিকে দিয়ে কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় তারা। এরপর তানিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দেয় ড্রাইভার ও হেলপার। হাসপাতালের আশপাশ থেকে রফিককে গ্রেফতার করলেও পালিয়ে যায় আল আমিন।

কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। আমরা বাসটি আটক করেছি। মেয়েটির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, বাসে বহন করা টেলিভিশন ও কাপড়ের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা একেবারেই নিশ্চিত যে তানিয়াকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুর রুটে চলাচলকারী ‘স্বর্ণলতা’ নামক বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণের পর মাথার পেছনে আঘাত করে হত্যা করা হয়। তিনি কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মো. গিয়াসউদ্দিনের মেয়ে। তানিয়া ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের কল্যাণপুর ক্যাম্পাসে সেবিকা পদে কর্মরত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close