নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

প্রেস কাউন্সিলে রাষ্ট্রপতি

গণমাধ্যম যেন মালিকের স্বার্থে ব্যবহার না হয়

বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানায় থাকা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে মালিকের স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ এখন অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক। এটা নিঃসন্দেহে গণমাধ্যমের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বেসরকারি খাতের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তবে একইসঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে, এসব গণমাধ্যম যাতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ব্যবহৃত না হয়। গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে যাতে এসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলকে ‘ওয়াচডগ’র ভূমিকা পালন করতে হবে। গণমাধ্যমকে ‘নিয়ম মেনে’ প্রতিযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, গণমাধ্যমের বিকাশের ফলে এ খাতে প্রতিযোগিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই প্রতিযোগিতা করেই গণমাধ্যকে এগিয়ে যেতে হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নিয়মনীতি মেনে এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গণমাধ্যম, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া অন্যটি অচল। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারে সংবাদমাধ্যম। তবে তা হতে হবে নিয়মনীতি ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে। মিথ্যা, উসকানিমূলক বা ‘হলুদ’ সাংবাদিকতা কখনোই গণতন্ত্রের বন্ধু হতে পারে না। মুদ্রিত সংবাদপত্রের মতো অন্য গণমাধ্যমের জন্যও নীতিমালা করতে প্রেস কাউন্সিলকে তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের জন্য, বিশেষ করে সংবাদপত্র ও সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য যে নীতিমালা ও আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে, তা দেশে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে সহায়ক হয়েছে বলে আমি মনে করি। অন্যান্য গণমাধ্যমের ক্ষেত্রেও এই নীতিমালা ও আচরণবিধির প্রযোজ্যতা বিবেচনা করতে হবে।

নবীন সাংবাদিকদের সৎ ও নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাংবাদিকতায় এখন তরুণ শক্তি যুক্ত হচ্ছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়ে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। গণমাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ততা এ পেশার মর্যাদা ও বিকাশকে আরো এগিয়ে নেবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রেস কাউন্সিলের এ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক গোলাম সারওয়ারকে আজীবন সম্মাননা (মরণোত্তর) দেওয়া হয়। গোলাম সারওয়ারের পক্ষে তার জামাতা সম্মাননা পদক নেন।

এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননা ক্যাটাগরিতে দৈনিক ইত্তেফাক, আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদী, গ্রামীণ সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক মুক্তবার্তার সহকারী সম্পাদক মো. মুরশিদ আলম, উন্নয়ন সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি মো. জসীম উদ্দিন, নারী সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে মাদারীপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুবর্ণগ্রাম পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আয়শা সিদ্দিকা (আকাশী), আলোকচিত্র সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে নিউএইজের ফটো সাংবাদিক সনি রামানীকে প্রেস কাউন্সিল পদক দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তথ্যসচিব আবদুল মালেক, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close