নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

বনানী কার্যালয়ে এরশাদ

বেঁচে আছি বেঁচে থাকব

নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার মধ্যে অনেকটা হঠাৎ করেই বনানীতে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এলেন। গাড়ি থেকে না নেমে নেতাকর্মীদের সামনে কয়েক মিনিট কথাও বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি কার্যালয়ের সামনে আসেন।

এরশাদ বলেন, ‘আজ বলতে এসেছি, আমাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না, এগিয়ে যাব। আমার বয়স হয়েছে, চিকিৎসা করতে দেবে না; বাইরে যেতে দেবে না। মৃত্যুকে ভয় করি না। বেঁচে আছি, বেঁচে থাকব। ২৭ বছর ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি, পার্টি ছাড়ি নাই। সব নির্ভর করে তোমাদের ওপর। কেউ পার্টি ছেড়ে যেও না, আমাকে প্রতিশ্রুতি দাও।’ নেতাকর্মীদের অভয় দিয়ে এরশাদ বলেন, ‘তোমাদের কোনো ভয় নেই। জাপা তোমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। জাপা চিরদিন নির্বাচন করেছে, এবারও করবে।’

২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদ নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান। এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে ‘অসুস্থ’ এরশাদের সিএমএইচে ভর্তির খবর এলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।

এ বিষয়ে গুঞ্জনের মধ্যেই জাতীয় পার্টির জোটসঙ্গী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত মাসের শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এরশাদের অসুস্থতা ‘রাজনৈতিক‘ নয়; তিনি ‘সত্যিই’ অসুস্থ। তাকে দু-এক দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু জাতীয় পার্টির তখনকার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার তখন সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করেন ভিন্নভাবে। তিনি বলেন, এরশাদের অসুস্থতা ‘এমন কিছু নয়’। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষে বেশ কয়েকজন নেতা ‘মোটা টাকায়’ মনোনয়ন বিক্রির অভিযোগ তোলেন এরশাদ ও হাওলাদারের বিরুদ্ধে। হাওলাদার সে সময় তা অস্বীকার করেন।

ঋণ খেলাপের অভিযোগে পটুয়াখালী-১ আসনে হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেলে গত সোমবার অনেকটা আকস্মিকভাবে পার্টির মহাসচিব পদে পরিবর্তনের ঘোষণা আসে। এরশাদের ‘সন্তানতুল্য’ হওলাদারকে সরিয়ে মহাসচিব করা হয় পার্টিতে ‘সরকার ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত মশিউর রহমান রাঙ্গাকে।

নতুন মহাসচিব দাবি করেন, এরশাদ এখন ‘হান্ড্রেড পারসেন্ট ফিট’ থাকলেও চিকিৎসার জন্য তার দেশের বাইরে যাওয়া জরুরি। কিন্তু পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব শেষ না করে তিনি দেশের বাইরে যেতে চান না। মহাজোটের আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হলে ১০ ডিসেম্বরের পর হয়তো এরশাদ বিদেশে যেতে পারেন।

গতকাল বনানীর কার্যালয়ের সামনে এসে নতুন মহাসচিবকে নিয়েও কথা বলেন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘পুরনো মহাসচিবকে ভালোবাসতাম। নতুন মহাসচিবকে তোমরা ভালোবাসো। সে নতুন, তাকে সাহায্য করো।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close