আমির হোসেন
সেট পিচে গোলের রেকর্ড
দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল বিশ্বকাপ। অনেক রেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে পর্দা নামল রাশিয়া বিশ্বকাপের। এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালের আগ পর্যন্ত ৬৩ ম্যাচে মোট গোল হয়েছে ১৬৩টি। তার মধ্যে সেট পিচ থেকে এসেছে ৬৮ গোল। যা বিশ্বকাপে নতুন রেকর্ড। এর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সেট পিচ থেকে সর্বোচ্চ ৬২টি গোল এসেছিল। এবার সেটা ছাড়িয়ে গেল। ১৬৩ গোলের মধ্যে ৬৯টি সেট পিচ থেকে। শতকরা হিসাবে সেট পিচ থেকে আসা গোল ৪২ শতাংশ। ৩২ দলের মধ্যে ১৫টি দল তাদের ৫০ শতাংশ গোল করেছে সেট পিচ থেকে। এ বিষয়ে ফিফার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যান্ডি রক্সবার্গ বলেন, ‘এই বিশ্বকাপে গোল করার ক্ষেত্রে সেট পিচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর আগে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ৪৫টি গোল এসেছিল কর্নার থেকে। এবারের বিশ্বকাপে কর্নার থেকে হওয়ার গোলের সংখ্যা ৩০টি।’
সেট পিচ থেকে এত গোল আসার পেছনের কারণ খেলার গতি বেড়েছে, রেফারিরা প্রযুক্তির সহায়তায় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারছে এবং ফাউলও বেশি ধরা পড়ছে, আর রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের মার্কিং করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। বিশেষ করে পেনাল্টি এরিয়ার মধ্যে। এবারের বিশ্বকাপে ২৮টি পেনাল্টি দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে গোল হয়েছে ২১টিতে। কর্নার, ফ্রি-কিক ও পেনাল্টি থেকে এত গোল হওয়ার মানে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা সঠিকভাবে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের মার্কিং করতে পারছেন না। তাতে করে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা গোল করার জন্য যথেষ্ট রুম পাচ্ছে।
এই সুযোগটাই পুরো টুর্নামেন্টে কাজে লাগিয়েছে ইংল্যান্ড। তাদের ১১ গোলের ৯টিই এসেছে সেট পিচ থেকে। যা বিশ্বকাপে নতুন রেকর্ড। এর আগে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে পর্তুগাল সেট পিচ থেকে সবচেয়ে বেশি গোল করেছিল। এবার তাদের পেছনে ফেলেছে ইংল্যান্ড। এবারের সেমিফাইনালের চারটি গোলের দুইটিই এসেছে সেট পিচ থেকে।
এবারের বিশ্বকাপে অনেক দল ইচ্ছা করেই বলের দখল নিজেদের কাছে রাখেনি। আক্রমণে যাওয়ার চেয়ে তারা জমাট রক্ষণাত্মক পন্থা অবলম্বন করে খেলেছে। আর এটার কারণ বিশ্বকাপের আগে দলগুলো প্রস্তুত হতে কম সময় পেয়েছে। একটি ম্যাচে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে যে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে তার সামান্যই দরকার হয়। সে কারণে কম র্যাঙ্কিংয়ের দলগুলো জমাট রক্ষণ নিয়ে বেশ কয়েকটি বড় বড় দলকে রুখে দিয়েছে। এটা করতে গিয়ে তারা বেশি বেশি ফাউল করেছে। তাতে ফ্রি-কিক, পেনাল্টি, কর্নার, থ্রো-ইন হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিপক্ষ গোল আদায় করে নিয়েছে।
"