কার্ল মার্কসকে শোষিতদের কাছে তুলে ধরতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক কামাল লোহানী। তিনি বলেছেন, ‘আমরা তার দ্বিশত জন্মবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করছি, আমাদের দায়িত্ব হবে কার্ল মার্কসকে মানুষের কাছে তুলে ধরা। তার যে শিক্ষা, তা যেন শোষিতদের মাঝে পৌঁছে যায়। সেই কাজ করতে হবে বামপন্থিদের।’

কার্ল মার্কসের জন্মের ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী এক সম্মেলন উদ্বোধনীতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

কবি মোহন রায়হানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সাবেক ডাকসু নেতা ডা. মুশতাক হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী ও মনজুরুল হাসান খান।

কামাল লোহানী বলেন, ‘কার্ল মার্কসকে নিয়ে আমার গ্রাামাঞ্চলের মানুষ, যারা এগুলো দেখলে বা শুনলে সমর্থন করবে, তাদের কাছে আমরা যাই না। প্রাান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে মার্কসের আদর্শ, তার চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে করেই একটি শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।’

খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সমাজতন্ত্র মানেই হলো অন্তর্র্বর্তীকালীন পর্যায়। কার্ল মার্কস সাম্যবাদের প্রথম পর্যায় বলেছেন সমাজতন্ত্রকে। ফলে শ্রেণিবিভক্ত থেকে শ্রেণিহীন সমাজে পৌঁছাতে দীর্ঘ ঐতিহাসিক পর্যায় পেরোতে হবে। একটি শ্রেণিহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কার্ল মার্কসের শিক্ষার মূল্য আজও রয়েছে।’

জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘১৯৯১ সালের পর থেকে আমরা পুঁজিবাদের যে আগ্রাসন দেখছি, এ থেকে বোঝা যায় ১৮০ বছর আগে মার্কস-এঙ্গেলসের সময়ে তারা যতটা না প্রাসঙ্গিক ছিলেন, এ সময়ে তারা সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।’

সম্মেলনে উদ্বোধনী অধিবেশনসহ মোট তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে ‘ নতুন দিনের মার্কস : সংকট না সম্ভাবনা?’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। ‘আমাদের মার্কস : বাংলাদেশে মার্কসবাদ’ শীর্ষক প্রথম প্যানেল আলোচনায় বিধান রিবেরুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সাখাওয়াত টিপু, অদিতি হক, আজিজুল রাসেল, খালেদুর রহমান সাগর এবং তাহমিদাল জামি।

‘মার্কসের পুঁজি : দেড়শ বছর পর’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় জহিরুল ইসলাম কচির সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, আবদুল হক, অধ্যাপক এম এম আকাশ, সলিমুল্লাহ খান এবং নুরুল কবির।

এর আগে সকাল ৯টায় কার্ল মার্কসের জীবনী নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দ্য ইয়াং কার্ল মার্কস’ প্রদর্শন করা হয়। এরপর উদ্বোধনী সংগীত এবং কবিতা আবৃত্তি করেন শিব কুমার শীল এবং কবি মোহন রায়।

"