বাগেরহাট প্রতিনিধি

  ১৬ এপ্রিল, ২০১৮

সুন্দরবনে ৭৭৫ টন কয়লা নিয়ে জাহাজডুবি

প্রাণবৈচিত্র্য ও পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা

সুন্দরবনের হাড়বারিয়া এলাকায় ৭৭৫ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে ‘এমভি বিলাস’ নামের একটি লাইটার জাহাজ ডুবে গেছে। গত শনিবার রাতে মোংলা বন্দরের পশুর নদীর হাড়বাড়িয়া এলাকায় ডুবোচরে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে ডুবে যায় জাহাজটি। মালিকপক্ষ জাহাজটি উদ্ধারের জন্য সঙ্গে সঙ্গেই তৎপরতা শুরু করে। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ৬০ নটিক্যাল মাইল দূরে হাড়বাড়িয়ার ৫ নম্বর অ্যাঙ্করের অদূরে লাইটারটি ডুবে যায়। এক পরিবেশবাদী বলেন, এই কয়লায় উচ্চমাত্রার সালফার রয়েছে। এ কারণে সুন্দরবনে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি।

ডুবে যাওয়া কার্গোর চালক মো. আমির হোসেন জানান, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া-৬ নম্বর অ্যাঙ্করেজে থাকা একটি বিদেশি জাহাজ থেকে প্রায় ৭৭৫ মেট্টিক টন কয়লাবোঝাই করে এমভি বিলাস নামক কার্গো জাহাজটি গত শনিবার বেলা ২টায় চ্যানেলের কূলের কাছাকাছি গিয়ে অবস্থান নেয়। এরপর রাত ৩টায় ভাটার সময় জাহাজটি চরে আটকে কাত হয়ে গিয়ে ডুবে যায়। ভাটার সময় জাহাজটির মাস্টার ব্রিজের আংশিক দেখা গেলেও জোয়ারের সময় জাহাজটি পুরোপুরি তলিয়ে থাকছে। কয়লা নিয়ে জাহাজটি ঢাকার মিরপুরের উদ্দেশে যাওয়ার কথা ছিল। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ডুবে যাওয়া এমভি বিলাস নামের জাহাজটি ৭৭৫ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে যাচ্ছিল। পথে ডুবচরে ধাক্কা লেগে এটি ডুবে যায়। জাহাজটি সাহায্য চাইলে এমভি শিপসা সেখানে পৌঁছে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে রাত ৩টার দিকে জোয়ারের পানির তোড়ে জাহাজটি কাত হয়ে ডুবে যায়। তা উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাহারা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. লালন হাওলাদার বলেন, গত ১৩ এপ্রিল লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এমভি অবজারভেটর জাহাজটি ২৪ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়ার ৬ নম্বর অ্যাঙ্করে নোঙর করে। ১৪ এপ্রিল সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাদার ভ্যাসেলটি থেকে লাইটার জাহাজটিতে ৭৭৫ মেট্রিকটন কয়লাবোঝাই করা হয়। এটি ঢাকার মিরপুরের উদ্দেশে রওনা হয়ে হারবাড়িয়ার ৫ নম্বর অ্যাঙ্করে পৌঁছে ডুবোচরে আটকা পড়ে। লাইটারের মাস্টার ডুবোচর থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য মোংলা বন্দরের সাহায্য চায়। বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্ধার যানটি ঘটনাস্থলে পৌঁছেও কোনো সাহায্য করতে পারেনি। ডুবে যাওয়া লাইটারটি এক হাজার মেট্রিকটন ধারণক্ষমতার ছিল বলে দাবি করে তিনি বলেন, প্রবল জোয়ারের চাপে কয়লাবোঝাই লাইটারটি কাত হয়ে ডুবে যায়। লাইটারের কয়লা কোথাও ভেসে যায়নি এবং এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে, সুন্দরবনে আবারও কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, কয়লার জাহাজ ডুবিতে সুন্দরবনের জলজ-প্রাণিজ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। কারণ এ কয়লা সাধারণত ইটভাটাগুলোতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ কয়লায় সালফারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist