সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৯ এপ্রিল, ২০১৮

সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎ প্লান্টে কর্ম নিরাপত্তা অটুট

সিরাজগঞ্জে স্থাপিত পিকিং পাওয়ার প্লান্ট থেকে ৫ বছরের অধিককাল ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে প্রায় হাজারখানেক শ্রমিক কর্মরত। এমনিতেই পাওয়ার প্লান্ট একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প, এ ধরনের প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে প্রচুর প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবে বিশ্বে প্রতি বছর ২৩ লাখ শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। আহত হয় আরো বেশি। অথচ বাংলাদেশের মতো একটি সদ্য উন্নয়নশীল দেশের এই পাওয়ার প্লান্টে এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি, কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল পিকিং পাওয়ার প্লান্ট প্রজেক্টের উদ্বোধন করেন। মাত্র ১৮ মাসের মাথায় বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু হয় ২০১২ সালের ২২ নভেম্বরে। এরপর ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৫০ থেকে ২২৫ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। কম্বাইন সাইকেল হিসাবে ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই। ২০১৫ সালের ৮ মে সেই প্রকল্পটিরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে ২২৫ মেগাওয়াট ইউনিট ডুয়েল ফুয়েল ২য় ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করেন তিনি। বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।

২০১৯ সেপ্টেম্বরে ৩য় ইউনিটের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই অর্থাৎ ২০১৮ এর মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে জানান

সেখানে কর্মরত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী পিযুষ ভট্টাচার্য্য। তাছাড়াও অপর এক কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, ৪র্থ ইউনিটের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং সিঙ্গাপুরের সেম্বকর্প যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ৪১৪ মেগাওয়াট ২০১৯ মাঝে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তির আগেই কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি। উপরোক্ত চারটি কেন্দ্রেই দ্বৈত জ¦ালানি (ডুয়েল ফুয়েল) হওয়ায় গ্যাসের স্বল্পতা থাকলেও তেল দিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব।

সাধারণত বিদ্যুৎ নির্মাণ কাজে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে অন্যান্য কাজ থেকে অনেক বেশি। আইএলও’র তথ্য মতে, প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন কর্মস্থানে নিরাপত্তাজনিত কারণে ২.৩ মিলিয়ন শ্রমিকের মৃত্যু এবং আরো ৩০০ মিলিয়ন শ্রমিক মারাত্মক আঘাতের সম্মুখীন হয়। কিন্তু সিরাজগঞ্জে কর্মরত শ্রমিকদের ২৩ লাখ কর্মঘণ্টায় এখনো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যায়।

গত ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ও হাইজেনিক নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্মস্থানের নিরাপত্তাজনিত মৃত্যুর হার অনেক বেশি। তথ্য সূত্রে প্রকাশ, ২০১৭ সালেই কর্মস্থানে ১২৪২ জন শ্রমিকের মৃত্যু এবং ৩৭১ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়। (অকুপেশনাল সেফটি হেলথ এবং ইনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওএসএইচই) এর তথ্য সূত্র)।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে ইউনিট-৪ এর কাজ সমাপ্ত হলে জাতীয় গ্রিডে আরো ৪১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযুক্ত হবে। সিরাজগঞ্জের ৪১৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্টের সেফটি ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাজুল ইসলাম। বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে সেফটি হেলথ ও এনভায়রনমেন্ট ডিপার্টমেন্টে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তিনি। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন কানুনে কর্মস্থানের নিরাপত্তার বিষয়ে সবই লিপিবদ্ধ আছে। শুধুমাত্র এর উপযুক্ত প্রয়োগ বা চর্চা নেই’। প্রকল্পে ঢালাই কাজে কর্মরত আল আমিন নামক একজন নির্মাণ শ্রমিক জানায়, এই প্রকল্পের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা বিধান আমাকে বিভিন্ন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist