পাঠান সোহাগ

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

প্রাণের বইমেলা

প্রথম দিনেই অসন্তোষ

সব প্রস্তুতি শেষ না করেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার পর্দা উঠল। তবে প্রথম দিনেই অব্যবস্থাপনার কারণে আয়োজকদের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মেলায় আসা লেখক, প্রকাশক ও দর্শনার্থীরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় গ্রন্থমেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার পর মেলার ফটক খুলে দেওয়া হয়। দর্শনার্থীরা বিকেল তিনটা থেকেই টিএসসি, দোয়েল চত্বরের আশপাশে অপেক্ষা করছিলেন। দ্বার খুলে দেওয়ার পর সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে গ্রন্থমেলার শিশুপ্রহর।

উদ্বোধনের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা যায়, স্টলগুলোর কাজও এখনো শেষ হয়নি। কয়েকটি স্টলে হাতুড়ি-পেরেকের শব্দÑকেউ বইয়ের তাক তৈরি করছেন। কেউ বই তুলছেন। এ ছাড়া মেলায় বিছানো ইটের ওপর ছিটানো আলগা বালি দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছিল অনেকের কাছে। দর্শনার্থী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ইট, বালু, কাঠ কাজ শেষে নিদিষ্ট জায়গায় রাখা হয়নি। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।’ সোহেল খান নামের আরেকজন বলেন, ‘আজ এসেছি ঘুরতে। তবে ধুলোবালির কারণে অস্বস্তি লাগছে। বই দেখে-বুঝে পরে কিনব।’

রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার পরিসর এবার বেড়েছে। বেড়েছে বইয়ের স্টল নিয়ে বসা প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা। প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুট এলাকায় ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ হাজার ৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৩৬টি লিটল ম্যাগাজিনকে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে রয়েছে শিশুচত্বর। ওই কর্নারকে সাজানো হয়েছে শিশুকিশোরদের জন্য বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশকে ১২টি চত্বরে ভাগ করা হয়েছে।

গ্রন্থমেলায় টিএসসি, দোয়েল চত্বর দিয়ে দুটি মূল প্রবেশপথ, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তিনটি পথ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাইরের ছয়টি পথ থাকবে। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

গ্রন্থমেলার প্রবেশ ও বাইরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের নিরাপত্তাকর্মীরা। নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকা জুড়ে আড়াই শ ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রন্থমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণ ও পার্শ¦বর্তী এলাকায় (সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চানখারপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত) নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার ব্যবস্থাপনায় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গত বছরের তুলনায় বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘একুশের গ্রন্থমেলা আন্তর্জাতিক মানের। সারা বিশ্বের মানুষ এখন বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত। এ মেলা সংস্কৃতিক্ষেত্রে তথা মননশীল জাতি গঠনে অবদান রাখবে। তবে মেলা আয়োজক কমিটি সব কাজ শেষ করেছে। তবে কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে। এটা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি।’

বাংলা একাডেমিসহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ বই বিক্রি করবে ২৫ শতাংশ ছাড়ে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা।

আজ শুক্রবার একুশে গ্রন্থমেলার দ্বিতীয় দিন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মেলা চলবে বেলা ১১ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে হবে শহীদ নূতনচন্দ্র সিংহ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সজিব কুমার ঘোষ। আলোচনায় অংশ নেবেন মহীবুল আজিজ, প্রফুল্লচন্দ্র সিংহ এবং রাশেদ রউফ। সভাপতিত্ব করবেন আবদুল মান্নান। সন্ধ্যায় থাকছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist