বন্যায় অর্ধকোটি লোক ক্ষতিগ্রস্ত
এবার দেশের অন্তত ৩০টি জেলায় আঘাত হেনেছে বন্যা; এতে অন্তত অর্ধকোটি লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর প্রাণহানী ঘটেছে কমপক্ষে ৯৮ জনের। আজ শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এই খবর জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, উজানে ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এবারের বন্যায় দেশের ৩০ জেলার ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৫৮৯ হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। অবশ্য ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে উত্তরের জেলাগুলোয়। তবে এসব নদীতে পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতির জন্য আরও কয়েকদিন লাগবে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, রাঙামাটি, নীলফামারী, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, যশোর, মৌলভীবাজার, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, কুমিল্লা, শেরপুর ও ঢাকা জেলার বিস্তীর্ণ জনপদ এখন পর্যন্ত বন্যা কবলিত।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজনীন শামীমা জানান, ৩০ জেলার ১৭৯ উপজেলা ও ৪৬টি পৌরসভার প্রায় ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০ পরিবারের ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন বানভাসি মানুষ এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিকালে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সারাদেশে ৯৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ৩০টি জেলা বন্যা আক্রান্ত। ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ বন্যা কবলিত জানিয়ে তিনি বলেন, দোহার ও নবাবগঞ্জের ৮৯৫৫টি পরিবারের ৩৭,৫১০ জন ক্ষতিগ্রস্ত এবং ২৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণও ১১০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রামে ১৮ জন, লালমনিরহাটে ৬ জন, সুনামগঞ্জে ২ জন, নেত্রকোণায় ২ জন, নীলফামারীতে ৮ জন, গাইবান্ধায় ৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, দিনাজপুরে ৩০ জন, জামালপুরে ৯ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জন, নওগাঁয় ৪ জন, যশোর ৩, শেরপুর ৩, মৌলভীবাজার ২, কুমিল্লা ২, সব মিলিয়ে মোট ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এবারের বন্যায় ৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৩৯টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গত জেলাগুলোতে ৪৫ হাজার ৭৫২টি টিউবওয়েলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০টি পরিবার পথে নেমেছে। ৫৫ হাঁস-মুরগি মারা গেছে। ২৫৩২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই হাজার ৭৮৯ কিলোমিটার রাস্তা, ১২৩টি ব্রিজ ও কালভার্ট, ২৮০টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।পিডিএসও/মুস্তাফিজ