সম্পাদকীয়

  ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

ক্রিকেট একাদশকে অভিনন্দন

সাগরপাড়ের যুগলবন্দি। যারা ক্রিকেট ভালোবাসেন, তারা অনেক দিন মনে রাখবেন এই যুগলবন্দিকে। যুগলবন্দির দুই প্রান্তে দুই যুবক। একজন সৌম্য অপরজন কায়েস। আমরা অনেকেই ইহুদি মেননের ভায়োলিন ও পণ্ডিত রবি শঙ্করের সেতারে যুগলবন্দি শুনেছি। যে মূর্ছনা মানুষকে যেভাবে আন্দোলিত করে, গত শুক্রবারের কুয়াশা ভেজা সবুজ গালিচায় ব্যাটে ও বলের মূর্ছনা আমাদের যতটুকু আন্দোলিত করেছে তা যেন রবি-মেননের যুগলবন্দির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

আমাদের সেই মূর্ছনাকে বড়বেশি মহিমান্বিত করেছে আমাদের দেশপ্রেম। বহু দিন পর ক্রিকেট একাদশের মাঝে আমরা দেশপ্রেমের সেই নিদর্শন খুঁজে পেয়েছি। ক্রিকেট একাদশ দেশের সব ক্রিকেট দর্শক ও শ্রোতাদের মরচে পড়া বোধকে নতুন করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেতে সক্ষম হয়েছে।

প্রবল আত্মবিশ্বাস ও দেশপ্রেমের মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তনের এক অবিস্মরণীয় গল্পের জন্ম হলো ২৬ অক্টোবর ২০১৮। যে গল্পের মূল নায়ক হিসেবে আমরা পেয়েছি দুই ক্রিকেট যোদ্ধাকে। যাদের একজন সৌম্য সরকার, অপরজন ইমরুল কায়েস। সবকিছুর মাঝে যে সিম্ফনির সুর ও লহরি বাঁধা ছিল, তার সবটুকুই যেন সৌম্য-ইমরুলের ব্যাটিং নৈপুণ্যে বেজে ওঠা দীপকের তান। আগ্রাসী সৌম্য আর স্থীর কায়েস। ধীরলয়ে বয়ে চলা মোহনীয় আলাপ ও বিস্তারের সঙ্গে তান ও তেহাইয়ের ঝড় বাংলাদেশের হাতে তুলে দিল ৭ উইকেটের জয়। তুলে দিল জিম্বাবুয়েকে আরো একবার ধবলধোলাইয়ের স্বাদ।

২২০ রানের যুগলবন্দি। বাংলাদেশের মাটিতে যেকোনো উইকেটে টাইগারদের এটিই সর্বোচ্চ। এই ওয়ানডে সৌম্যকে দিয়েছেও অনেক। সুতোর ওপরে টলতে টলতে যেন সৌম্য ফিরে পেয়েছেন তার হারানো যৌবন। এ যৌবনকে ধরে রাখতে পারলে সৌম্যের কাছে আমাদের প্রাপ্তিও হবে অনেক। তিনি আমাদের প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে, মানুষের প্রত্যাশার কোনো সীমারেখা নেই। তবে প্রত্যাশা যদি বাস্তবতার কাছাকাছি হয় তাহলে সেই প্রত্যাশা অমূলক হবে না। সৌম্যর কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা তা অমূলক নয়। বরং বাস্তবতার অনেক কাছাকাছি। বিষয়টি সৌম্যকেই মনে রাখতে হবে। আশা করব সৌম্য তা মনে রাখবেন।

কেবল সৌম্যই নন। পাশে তো আরো একজন আছেন। যিনি যুগলবন্দির সুর মূর্ছনা তৈরির মধ্য দিয়ে এক অভূতপূর্ব ঈন্দ্রজাল তৈরি করে আমাদের বিমোহিত করেছেন। আমাদের স্মৃতিতে অনেক দিন এই সুর মূর্ছনা আন্দোলিত হতে থাকবে। আর তার ব্যাট থেকে আরো একটি সুর মূর্ছনার গহ্বরে হারিয়ে যাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকব।

শেষ কথায় বলতে হয়, যারা সুর সৃষ্টিতে নিমগ্ন হবেন তারা যদি তাদের সৃষ্টির প্রতি প্রেমের আনুগত্যে বিভোর হতে না পারেন তাহলে সৃষ্টি বিঘিœত হবে। আমরা মনে করি, আমাদের ক্রিকেট দলের প্রতিটি সদস্যের মাঝে আমরা সেই অনুভূতির প্রতিফলন দেখতে পাব। সবাইকে আবারও শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল,অভিনন্দন বার্তা,সিরিজ জয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close