সম্পাদকীয়
নির্বাচন এবং নির্বাচন
চারপাশে কেবল নির্বাচনের উলুধ্বনি। নির্বাচন আসছে। অনেকটা যেন বিয়ের আসরে বর আসার মতো। একটির পর একটি। পাঁচ-পাঁচটি সিটি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসছে অল্প সময়ের ব্যবধানে। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা ইলেকশন কমিশনকে সম্প্রদান করতে হবে পাঁচ কন্যাকে। এখানেই শেষ নয়, তখনও থেকে যাবে শেষ এবং প্রিয় কন্যাকে উপযুক্ত পাত্রের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি। সে কথা পরে আলোচনা করা যাবে। আপাতত পাঁচ কন্যাতেই থাকা যাক।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেশের পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিটি পাঁচটি—গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী। তবে নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঠিক করা যায়নি। যতদূর জানা গেছে, তারিখ ঘোষণা না হলেও নির্বাচন উপযোগী প্রতিটি এলাকার নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচনসংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।
শোনা যাচ্ছে, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় কমিশন। মেয়ের বিয়ে বলে কথা। যত সহজে কথাটা বলা যায় তত সহজে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। কিছুদিন আগে ইসি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন নিয়ে চেষ্টা কম করেননি। তবে তাকে তা মাঝপথেই থামতে হয়েছে। মেয়ের দ্বিতীয় বিবাহ বলে কথা। হয়তো সে কারণেই মাঝপথে এসে ভেঙে গেছে। বরপক্ষ তত বেশি উদার হতে পারেনি বিধায় কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা ইসির পক্ষেও আর এগোনোটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
এবার বোধহয় পিতার সে সমস্যা নেই। ইসি নিজের মেজাজের ওপর ভর করেই কন্যা সম্প্রদানে সফল হবেন। আমরাও ইসির এ রকম মেজাজের ওপর আস্থাশীল হতে চাই। ‘নিজের ভোট নিজে দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’—এই মন্ত্রের মর্যাদাকে অক্ষুণ্ন রেখে গণতন্ত্রের মাহাত্ম্যকে আরো সুরভিত করার কাজে এগিয়ে যাব। ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন তার যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।
ইসি প্রমাণ করেছে—এ দেশেও স্বচ্ছ ও ইতিবাচক নির্বাচন সম্পন্ন করা যায়। যদি কমিশনের সততা অটুট থাকে, যদি ইসি সকল মোহের ঊর্ধ্বে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করে এবং জনগণের আমানত সংরক্ষণের দায়িত্বকে ইমানি দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করে। সরকার ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে ইলেকশন কমিশনের পাশে দাঁড়ায়। আর তখনই কোনো পিতাকে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা হয়ে কারো করুণা ভিক্ষা করতে হবে না। গণতন্ত্র নিজের মতো করে বলবান হয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে; যা এ দেশের প্রায় প্রত্যেক মানুষেরই প্রত্যাশা।
পিডিএসও/হেলাল