সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

  ০৯ মার্চ, ২০২৪

সৈয়দপুরে অবৈধস্থাপনা : উচ্ছেদ নাকি ইঁদুর-বিড়াল খেলা 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাত্র ৪/৫ দিন পার না হতেই সেগুলো আবার দখলে নিয়েছে দখলদাররা। উচ্ছেদ অভিযানের নামে এভাবেই চলছে ভাঙা-গড়ার খেলা। মাঝে মধ্যে অর্থ সংকট দেখা দিলে পকেট ভারী করতেই রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ আছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা মস্করা করে বলেন এ যেন ইঁদুর-বিড়াল খেলা।

অভিযোগে বলা হয় গত ৩ মার্চ রোববার রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১ নং রেলক্রসিং হতে ২ নং রেলক্রসিং পর্যন্ত রেল লাইনের দু’ধারে গড়ে ওঠা প্রায় দুই শক্তাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা নেতৃত্বে রেলওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে। কিন্তু এ অভিযানের পর মাত্র ৫/৬ দিন উচ্ছেদ করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুরনো চিত্রে রূপ নেয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উচ্ছেদের মাত্র ৫/৬ দিন যেতে না যেতেই ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ জায়গায় অস্থায়ী দোকান বসিয়ে ফের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। রেললাইনের দুইপাশ আগের সেই অবস্থাতেই ফিরে গেছে। এতে করে ঝুঁকি নিয়ে চলছে একাধিক ট্রেন। ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী, রেলওয়ে আসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেল পুলিশের কারণেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। দুই নং রেলক্রসিং এলাকা থেকে ফলের দোকান ও শীতবস্ত্রের দোকানসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু রেল কর্মকর্তা সুলতান মৃধা চলে যাওয়ার পরপরই আবার ওই স্থান দখল হওয়া শুরু হয়ে যায়।

রেললাইন সংলগ্ন পুরাতন গরম কাপড় বিক্রেতাদের সাধারণ সম্পাদক অষেস কুমার বলেন, শহরের কয়েকজন, রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেলওয়ে থানা পুলিশকে নিয়মিত টাকা দিতে হয়েছে।’কারণ আমরা গরীব মানুষ। দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করার সামর্থ নেই আমাদের। এ কারণে তাদের মাসিক কিছু দিয়ে রেললাইন সংলগ্ন ব্যবসা করেছি। কয়েক দিন আগে এই এলাকার ব্যবসায়িদের কাছে বেশি টাকা দাবি করেন ওই সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কয়েকজন রেল পুলিশ। তাদের দাবি কৃত অর্থ দিতে না পারায় আমাদের দোকানপাট গুড়িয়ে দেয়া হয়।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নুরুল ইসলাম নামের এক নেতা বলেন, সারা সৈয়দপুরে রয়েছে রেলওয়ের প্রায় সারে ৮ শ একর সম্পত্তি। এরমধ্যে গরীবের চেয়ে বড়লোকরাই বেশি রেলওয়ের জমি অবৈধ ভাবে দখল করে ঘরবাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করে আছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেন না। কারণ অর্থ বাণিজ্য। গরীবরা তাদের দাবীকৃত অর্থ দিতে পারে না বলেই বার বার উচ্ছেদ করা হয়। তাছাড়া সামনে রমজান ও পবিত্র ঈদে টাকার দরকার আছে বলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন কারখানা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রোবায়েতুর রহমান বলেন, রেলপথ বিভাগের মনোভাবের কারণে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন অনেকেই এবং ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন।

সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. সুলতান মৃধা বলেন, স্বাভাবিক ভাবে ট্রেন করতেই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। দোকানদারদের কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তি হীন। উপর মহলের নির্দেশ পেলে আগামীতে রেললাইন সংলগ্ন অবৈধ ভাবে কোন ব্যবসায়ীদেরই দোকান পাট নির্মাণ করতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সৈয়দপুরে অবৈধস্থাপনা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close