শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

  ১৭ মে, ২০২৪

রিমান্ড শেষে ফের কারাগারে ১৫ সদস্য

বান্দরবানে কেএনএফের অন্যতম সমন্বয়ক আকিম বম গ্রেপ্তার

 বান্দরবানে গ্রেপ্তার কেএনএফের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বম। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। শুক্রবার (১৭ মে) জেলার লাইমিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৫। ওইদিন বিকেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষে র‌্যাব-১৫ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, দেশে-বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকি-চিনের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বম। তিনি কেএনএফ বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলা অঞ্চলের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক।

আকিম বমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব-১৫-এর অধিনায়ক বলেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আকিম ও মাইকেল সন্ধ্যায় হেঁটে কেএনএফের ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরের দিন পর ভোর পাঁচটার দিকে তারা রোয়াংছড়ির গহীন পাহাড়ী জঙ্গলের ট্রেনিং সেন্টারে পৌঁছায়। সেখানে একজন নারী কমান্ডারের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয় ও ট্রেনিং সেন্টারে তাদের স্বাগত জানানো হয়। আকিম বমসহ তাদের ব্যাচে ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিল। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করত ৪-৫ জন ও প্রশাসনিক কাজের জন্য আলাদা সদস্য নিয়োজিত ছিল।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রশিক্ষণ শেষে ক্যাম্পে যোগদান করার কথা থাকলেও যৌথ অভিযানের কারণে কেএনএফের ক্যাম্পে যেতে পারেনি আকিম। পরে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য রোয়াংছড়ি ও বান্দরবান সদর এলাকা থেকে সদস্য সংগ্রহের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ নারীকে কেএনএফ সদস্য করতে সক্ষম হয়েছেন আকিম বম। তবে প্রায় ৫০ জন কেএনএফের নারী সদস্য রয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

এদিকে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশের অস্ত্র লুট, মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজন কেএনএফের ১৫ সদস্যকে দুদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে শুনানি শেষে তাদের ফের কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের বিচারক মো. নুরুল হক। বান্দরবান আদালতের জিআরও বিশ্বজিৎ সিংহ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

জিআরও বিশ্বজিৎ সিংহ জানান, রুমা থানার মামলায় ১২ জন ও থানচি থানার মামায় তিনজনসহ মোট ১৫ আসামিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা এবং পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি মামলা হয়। ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ অভিযান করে। এ পর্যন্ত ৯টি মামলায় ৮৫জন আসামমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার পর ৬ এপ্রিল থেকে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে যৌথবাহিনর অভিযান চলছে এবং এখনও চলমান রয়েছে।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বান্দরবান,কেএনএফ,সদস্য,গ্রেপ্তার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close