নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪

ময়মনসিংহের নান্দাইল

সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে  বেহাত জলাশয়ের সম্পত্তি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর-কাদিরপুর জলাশয়। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর ও কাদিরপুরে ১১ দশমিক ৮১ একরের আবদ্ধ জলাশয়টি যুগ যুগ ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সে সুযোগে প্রায় অর্ধেক সম্পত্তি ব্যক্তি নামে রেকর্ড করে নিয়েছে কতিপয় ব্যক্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ ইচ্ছামতো ভরাট করছে কেউবা করছে খনন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই আবদ্ধ জলাশয়টি একসময় ছিল খরস্রোতা নদী। পরবর্তীতে প্রাকৃতিক কারণে আবদ্ধ জলাশয়ে রূুপ লাভ করে। যা ‘কন্যার কুড়’ নামে পরিচিত। প্রশাসনের সঠিক কোনো পরিকল্পনার না থাকায় বেহাত হচ্ছে সরকারি সম্পত্তি। সঠিক উদ্যোগ নিলে সরকারি সম্পত্তিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান, সরকার পাবে রাজস্ব।

জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম খুররম খান ১৯৮০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জলাশয়টি দখল করে মাছ চাষ করত। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বাধা দিয়ে প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে দখল মুক্ত করে। সাবেক সংসদ সদস্য তখন সংক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর নামে একাধিক মামলা করেন। উচ্চ আদালতে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হলে জলাশয়টি সরকারি সম্পত্তি বলে রায় দেওয়া হয়।

পরিত্যক্ত জলাশয়টি মাছ চাষের জন্যে লিজ পেতে যুব উদ্যোক্তা আবু হানিফ সরকার ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর একটি আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন তহশিলদার (নায়েব) সরেজমিন তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে জলাশয়টিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বিধি অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লিজ প্রদানের সুপারিশ করেন।

নান্দাইল উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, এসব আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন তহশিলদার ও উপজেলা সার্ভেয়ার একক ও যৌথ ভাবে চারটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড ভুক্ত ১১ দশমিক ৮১ একর সরকারি সম্পত্তির মধ্যে ৪ দশমিক ৯৪ একর সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেকর্ড ভুক্ত হয়ে গেছে। ফলে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয় সরকারি সম্পত্তিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, ব্যক্তি নামে রেকর্ডীয় সম্পত্তি আইনি প্রক্রিয়ায় রেকর্ড সংশোধন, রাজস্ব আদায়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উক্ত আবদ্ধ জলাশয়টিকে জলমহাল ঘোষণার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর গত বছরের অক্টোবরে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

জলাশয় ধারের বাসিন্দা আবদুল কাদির বলেন, সরকারি সম্পত্তি এভাবে ফেলে না রেখে লিজ দেওয়া উচিত। এতে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে সরকারও রাজস্ব আদায় করতে পারবে।

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ময়মনসিংহ,নান্দাইল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close