সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৯ মে, ২০২৩

পেট থেকে ১৫ কলম উদ্ধার, ভেতরে আরও ৫টি

এন্ডোস্কোপি করে মোতালেব হোসেনের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করে (৩৭) বছরের এক যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক। মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের আটারদাগ গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে।

মোতালেব পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, ব্যথা ও অসুস্থতা নিয়ে একের পর এক চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কোনো সমাধান মিলছিল না। শেষে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে বিষয়টি ধরা পড়ে এবং ওই যুবকের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়। এর আগে ২০০৬ সালেও মোতালেব হোসেনের পেটব্যথা হয়েছিল। সে সময় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে দুটি লোহার টুকরো বের করা হয়।

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ সূত্র জানায়, মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা দুই সপ্তাহ ধরে মোতালেব হোসেনের পেটব্যথার চিকিৎসা দিয়েছেন। কোনো ফল না পেয়ে এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাম করে বুঝতে পারেন, তার পাকস্থলীতে কলমজাতীয় বস্তু রয়েছে। এরপর তিন ঘণ্টায় তার গলা দিয়ে টিউব ঢুকিয়ে (এন্ডোস্কোপি করে) ১৫টি কলম বের করা হয়। তার পেটে এখনো চার-পাঁচটি কলম রয়েছে।

মোতালেব হোসেনের মা লাইলী বেগম বলেন, আমার ছেলে ভালো ছাত্র ছিল। এসএসসি পাসের পর সে গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর কখন কলমগুলো গিলেছে আমরা বলতে পারব না। দীর্ঘদিন সুস্থ-স্বভাবিকভাবেই কাজ করেছে সে। এক বছর হলো পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসাল্ট্যান্ট আমিনুল ইসলাম ও বিভাগীয় প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন মোতালেব। তিনি মানসিক রোগী। পরে তার পেট পরীক্ষা করে দেখা যায় পেটের ভেতর অনেকগুলো কলম রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোনো অপারেশন ছাড়াই এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে একে একে পেট থেকে বের করে আনা হয় ১৫টি কলম। তার পেটের বাকি কলমগুলো বের করা হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় তিনি কীভাবে কলমগুলো গিলেছেন, বুঝতে পারছি না। এটি আসলেই চিন্তার বিষয়। আমাদের মনে হচ্ছে, তার স্নায়ুতন্ত্রের কোনো সমস্যা থাকতে পারে।

ডা. জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, মোতালেব হোসেন এখন অনেকটাই সুস্থ। সবগুলো কলম অপসারণের পর তাকে স্নায়ুতন্ত্র বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে মোতালেব হোসেন বলেন, আগে একদম সুস্থ ছিলাম। এক বছর ধরে পেটব্যথায় কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। তবে কখন, কীভাবে কলমগুলো গিলে ফেলেছি, কিছুই বলতে পারছি না।

মোতালেব হোসেনের পরিবার জানায়, তাঁতের শাড়িতে ব্যবহার করা নকশা এঁকে সেটি তাঁতযন্ত্রে বসানোর কাজ করতেন মোতালেব হোসেন। তিনি ১৯৯৯ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। এরপর ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা দেননি তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
যুবকের পেটে কলম,সিরাজগঞ্জ,মোতালেব
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close