reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ আগস্ট, ২০২২

নওগাঁয় চাল ও হিলিতে সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি

দেশের বৃহত্তম ধান-চালের মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহে মোটা এবং সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। অন্যদিকে, দিনাজপুরের স্থ তে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি বাড়ায় পরিবহন খরচ ব্যয় বেড়েছে। ফলে কিছুটা চালের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া নানা অজুহাত রয়েছে দাম বাড়ানোর পেছনে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, দেশের বৃহত্তম ধান-চালের মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহে মোটা এবং সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। এদিকে চালের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

নওগাঁর পৌর খুচরা চাল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মোটা স্বর্ণা-৫, ৫৪-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল কেজিতে ৫০ টাকা। এ ছাড়া সরু চাল জিরাশাইল কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, কাটারি ৭২-৭৪ টাকা এবং বিআর-২৮, ৫৮-৬০ টাকায়।

চাল কিনতে আসাইসমাইল হোসেন বলেন, চালসহ প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবনযাপন করা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। আয় বাড়েনি, পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি।

একই কথা বলেন চাল কিনতে আসা সুলতানা পারভীন। তার পরিবারে প্রতিদিন চালের প্রয়োজন ৪ কেজি আর বর্তমান বাজারে ৪ কেজি চালের দাম ২৬০ টাকা। তিনি বলেন, ভিক্ষার থালা নিয়ে বের হলেও জীবন চলবে না।

নওগাঁ ক্ষুদ্র চাল বাজারের সাধারণ সম্পাদক নূর-নবী বলেন, নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো ভাতের পাশাপাশি আটা ব্যবহার করতেন। কিন্তু তারা সেই পরিমাণ আটা পাচ্ছে না। এর ফলে মোটা চালের ওপর ঝুঁকেছেন তারা। আর এ কারণে মোটা চালের দাম বেড়েছে।

নওগাঁ পৌর খুচরা চাল বাজারের চাল ব্যবসায়ী তাপস কুমার বলেন, মোকামগুলোতে মোটা চালের আমদানি খুব কম। ফলে বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিদিন ৫ বস্তা চাহিদার তুলনায় চাল পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ বস্তা।

নওগাঁ সদর উপজেলার মেসার্স ফারিহা রাইস মিলের মালিক শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি তেলের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে পরিবহন খরচ বেড়েছে। এজন্যই মোটা চালের দাম বেড়েছে। এখানে মিল মালিকদের করার কিছু নেই।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, মানুষ সরু চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিল। ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় তারা এখন মোটা চালের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে সরু চালের চেয়ে মোটা চালের দাম বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, জ্বালানি তেলেরমূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগেও মোকাম থেকে ২০০ মণ ধান নিয়ে আসতেতিন হাজার টাকা খরচ হতো, এখন সেই পরিমাণ ধান আনতে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।ঢাকায় যে চাল পাঠাতে দশ থেকে তেরো হাজার টাকা খরচ হতো সেই চাল পাঠাতে ষোলো থেকে সতেরো হাজার টাকা লাগছে।

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের হিলিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানের বেড়েছে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম।

রবিবার (১৪ আগস্ট) সকালে হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে, কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। সাদা এলাস কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়, জিরা ৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৭০ টাকায়।

অন্যদিকে বেড়েছে সয়াবিন তেল, মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, ব্রয়লায় মুরগি কেজি প্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। ডিম খাচিপ্রতি ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। এছাড়া বেড়েছে চিনি, আদা, রসুন, লবঙ্গ, মাছ ও গরুর মাংসের দাম। হিলি বাজারে বাজার করতে আসা প্রণব কুমার চক্রবর্তী বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। গরিব মানুষের বেঁচে থাকাই দায়। বাজারনিয়মিত মনিটরিং করা দরকার।

হিলি বাজারের মসলা বিক্রেতা ইয়াছিন রানা বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সব ধরনের মসলার দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অনেক বিক্রি কমে গেছে।ছোট দোকানদাররা অর্থের অভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না।

হিলি বাজারের মুরগি বিক্রেতা শাকিল হোসেন বলেন, বিভিন্ন ধরনের মুরগির খাবারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খামার মালিকরা বেশি দামে মুরগি বিক্রি করছেন। আমরা বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রিতা শাহাবুল ইসলাম বলেন, সরবরাহ কমের কারণে আমদানিকারকরা মোকামে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। যার জন্য আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তবে আগের থেকে ক্রেতা অনেক কমে গেছে। আমরাও শান্তিমতো ব্যবসা করতে পারছিনা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁয় চাল,হিলিতে সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close