প্রাচীন মন্দিরের রক্ষক রহস্যময় কুমির!
ভারতের কেরেলা রাজ্যের অনন্তপুরা গ্রামের খ্যাতি এক অতি প্রাচীন মন্দিরের কারণে। এই মন্দিরকে ঘিরে অসংখ্য কিংবদন্তী বিদ্যমান। প্রখ্যাত বিষ্ণুভক্ত সন্ন্যাসী বিল্বমঙ্গলম এই মন্দিরেই উপাসনা করেন বলে জানা যায়। স্বয়ং বিষ্ণু এক বালকের ছদ্মবেশে তাকে দেখা দেন বলে জানায় ইতিহাস।কিন্ত এই প্রাচীন মন্দির নিয়ে রয়েছে বিচিত্র অভিজ্ঞতা। এই মন্দিরের হ্রদে বাস করেন এক বিশাল কুমির। আর এই কুমিরকে ঘিরেই জল্পনা-কল্পনা-লোককাহিনীর শেষ নেই।লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মন্দিরে ছুটে আসেন নানা কারণে। তবে মন্দিরটি বিখ্যাত হয়ে আছে কুমিরের কারণেই।
অতি প্রাচীন কাল থেকেই এই মন্দিরের হ্রদে একটি বিশালাকার কুমিরকে দেখা যায়। একটির বেশি দু’টি কুমিরকে কেউ প্রত্যক্ষ করেননি। এই কুমিরটিকে অনন্তপুরা মন্দিরের রক্ষক বলে মনে করা হয়। লোক পরম্পরায় কুমিরটির নাম ‘বাবিয়া’।আজ পর্যন্ত কুমিরটি কারোকে আক্রমণ করেনি। ওই হ্রদে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন স্নান করেন। কোনও দিন কোনও ব্যক্তির উপরে বাবিয়াকে চড়াও হতে দেখা যায়নি।
তবে লোককথায় জানা যায়, ১৯৪৫ সালে এক ব্রিটিশ সৈন্য কুমিরটিকে গুলি করে মারে । পরের দিন সেই সৈন্যকে সাপে কাটে। সে মারা যায়। কিন্তু মৃত বাবিয়ার জায়গায় পরের দিনই উপস্থিত হয় আরও একটি কুমির।
কুমিরটির সঙ্গে পুন্যর্থীদের বেশ সখ্যতা। পূণ্যার্থীরা পুজো দিয়ে বেরিয়ে এসে তাকে চাল ও গুড়ের নাডু খাওয়ান। সেও সোনামুখ করে খায়। একটু সাহসীরা তাকে আদর করেন। বাবিয়া ঠান্ডা মেজাজেই থাকে। কিন্তু রোজ তাকে দেখা যায় না। যেদিন সে ভেসে ওঠে জলের উপরে, সেই দিনটিকে বিশেষ শুভদিন বলে মনে করেন পুন্যর্থীরা।
এই প্রাচীন বিষ্ণু মন্দিরকে সে রাজ্যের প্রধান মন্দির থিরুঅনন্তপুরমের অনন্তপদ্মনাভস্বামী মন্দিরের আদিরূপ বলে ধরে হয়। মনে করা হয়, অনন্তপদ্মনাভস্বামী শ্রীবিষ্ণু এখানেই আগে বাস করতেন। পরে তিনি স্থান পরিবর্তন করেন। ৩০২ ফিট গভীরতা বিশিষ্ট এক হ্রদের মাঝখানে এই মন্দির। কাছেই এক গুহা। কথিত আছে, অনন্তপদ্মনাভস্বামী এই গুহাপথেই থিরুঅনন্তপুরম চলে গিয়েছেন।
পিডিএসও/তাজ