নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস

শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবস গতকাল সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এর আগে দেশের শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতন হলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন লাখ কোটি টাকার ওপরে কমে যায়। তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। ফলে ঈদের পর শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন বিনিয়োগকারীরা।

এদিকে ঈদের ছুটি শেষে সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ব্রোকারেজ হাউসে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ইরানের হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ফলে লেনদেন শুরু হতেই মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। এতে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সূচকের বড় পতন হয়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে। ফলে বাড়া পতনের মাত্রাও।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩২টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩৬টি প্রতিষ্ঠানের। আর ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৮ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ দরপতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজার খুবই সেনসেটিভ জায়গায়। যেকোনো ধরনের অনিশ্চিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এখন ইরান-ইসরায়েল পরিস্থিতিও শেয়ারবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। কারণ ইরান-ইসরায়েল পরিস্থিতি নতুন বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, ইরান যদি হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তাহলে তেল সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। তখন বিশ্বে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম ব্যাপক বেড়ে যায়। ওই যুদ্ধ বাঁধার পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক যে সংকট সৃষ্টি হয়, তা থেকে এখনো বের হওয়া সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ইরান-ইসরায়েল ইস্যু পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলল।

এদিকে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ কমে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৭ কোটি ৫৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৪৩ কোটি ৮৪ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৭৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্স।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, শাহিনপুকুর সিরামিকস, কহিনুর কেমিক্যাল, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন। অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close