নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ মে, ২০১৮

আমদানি বাড়তে থাকায় চাপের মুখে রিজার্ভ

মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়েছে ৩৩ শতাংশ

আমদানি ব্যয় বেড়েই চলেছে। আর আমদানি বাড়তে থাকায় চাপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। মূলত পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্পসহ অন্যান্য বড় প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানির কারণেই আমদানির সাম্প্রতিক উলম্ফলন। তাছাড়া চাল, জ্বালানি তেল, ক্যাপিটাল মেশিনারিসহ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানিসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আমদানিসংক্রান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য ৫ হাজার ৫৯৫ কোটি ৭৩ লাখ (৫৫ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন) ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। উল্লিখিত সময়ে এলসি নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট) হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারের। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। আর নিষ্পত্তি হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে এই ৯ মাসে এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ৫৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং নিষ্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, উল্লিখিত সময়ে (জুলাই-মার্চ) খাদ্যপণ্য (চাল এবং গম) আমদানির এলসি বেড়েছে ২১৮ শতাংশ। জ্বালানি তেল আমদানিতে ৩৭ শতাংশ, মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানিতে ৩৩ শতাংশ এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানির এলসি বেড়েছে ১৪ শতাংশ।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এরই মধ্যে বলেছেন, আমাদের প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণেই আমদানি ব্যয় বাড়ছে বলে জানান তিনি। এছাড়া আগামী দিনগুলোতে সার্বিক রিজার্ভ পরিস্থিতি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অনুকূল থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জানা যায়, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ৩৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রফতানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এছাড়া ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এদিকে, আমদানি বাড়তে থাকায় চাপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল এবার ১৪০ কোটি ডলারে পরিশোধ করতে হবে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদে আকুর বিল ১৫৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে ৩ হাজার ৩১২ কোটি (৩৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন) ডলার ছিল। সোমবার বা মঙ্গলবার আকুর মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১৪০ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist