নৌযানের যান্ত্রিক ক্রটি, সংস্কার ও যাত্রী সংকটের কারণ দেখিয়ে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া-নুরাইপুর-ঢাকা নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। লঞ্চ চালানোর রোটেশনে এ নৌপথে ৪টি লঞ্চ চলাচল করত। ১৫দিন ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন এ নৌপথে যাতায়াতকারী যাত্রী, ব্যবসায়ী, ঘাট ইজারাদার ও শ্রমিকরা।

লঞ্চঘাট ইজারাদার ও শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালাইয়া, নিমদী, নুরাইপুর ও ধুলিয়া লঞ্চঘাট থেকে গত ৫০ বছর ধরে ঢাকার সঙ্গে নৌপথে লঞ্চ চলাচল করে আসছে। বাউফল এবং দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার যাত্রী যাতায়াত ও ব্যবসায়ীরা কম খরচে নিরাপদে পণ্য পরিবহন করে থাকেন। ঘাটগুলোয় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী সংখ্যা বেশ কমেছে। তারপরেও ৩০০ থেকে ৩৫০ জন যাত্রী নিয়মিত যাতায়াত করেন এ রুটে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে লঞ্চচলাচল বন্ধ করে দেন লঞ্চ মালিকরা। টানা ৭দিন বন্ধ থাকে লঞ্চ চলাচল। এরপর ১৬ দিন চলাচল করার পর আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ কালাইয়া ঘাট থেকে এমভি বন্ধন-৫ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও আর কোনো লঞ্চ এ রুটে ঢাকা থেকে আসেনি। সে থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় কর্মব্যস্ত ঘাটগুলোয় নিরবতা বিরাজ করছেন। নেই কোনো হাক-ডাক। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। অসল সময় কাটাচ্ছেন ইজারাদাররা।

এ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, শিশু, নারী ও অসুস্থ রোগীর জন্য লঞ্চে ঢাকা যাতায়াত নিরাপদ ও আরামদায়ক নৌপথ। লঞ্চ বন্ধ থাকায় এসব যাত্রীরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

মো. আনোয়ার নামে এক যাত্রী বলেন, আমার বাবা অসুস্থ। ঢাকাতে নিয়মিত চিকিৎসকের চেকআপে নিতে হয়। লঞ্চ বন্ধ থাকায় খুব ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। অ্যাম্বুলেন্সে নিতে ব্যয় বেশি। দুঘর্টনার ঝুঁকিতো আছেই।

সাহরাব নামে আরেক যাত্রী বলেন, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে লঞ্চে ঢাকা যাত্রা আরামদায়ক ও নিরাপদ। লঞ্চ বন্ধ থাকায় গাড়িতে যেতে হচ্ছে। এতে ব্যয়ও বাড়ছে, যাতায়াত করতেও কষ্ট হচ্ছে। ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ সহজ ও সুন্দর করতে শীঘ্রই লঞ্চ চালুর দাবি যাত্রীদের। ঢাকা থেকে মুদি দোকানের পণ্য, পোশাক, ইলেকট্রনিক্স মালামাল, ফলসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হতো। একই সঙ্গে বাউফল থেকে মাছসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য কম খরচে ঢাকায় পরিবহন করা হতো।

"