নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদ রিমান্ডে

যৌন হয়রানির অভিযোগ

যৌন হয়রানির অভিযোগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার মধ্যরাতে ঢাকার কলাবাগানের বাসা থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আজিমপুর শাখার গণিতের এই জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গতকাল মঙ্গলবার রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

লালবাগ থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, সোমবার রাত ১২টার কিছু পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন বাদী। গত সোমবার সন্ধ্যায় লালবাগ থানায় এ ঘটনায় মামলা করা হয়। থানার ডিউটি অফিসার বলেন, এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে তার মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এ মামলা করেছেন। এর আগে সোমবার রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভায় সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, সবার আগে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইনের নিয়মের ব্যত্যয় করে কোনো কিছু করতে পারব না। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাই সোমবার রাতে আমরা মিটিং করে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। এরপর আমরা পরবর্তী ধাপে যাব।

এদিকে শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারের চাকরিচ্যুতি এবং শাস্তির দাবিতে গত রবিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার শিক্ষার্থীরা। যৌন হয়রানির ঘটনা প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও অভিভাবকদের দাবির মুখে পরিচালনা কমিটির সভায় গণিতের ওই জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সোচ্চার হলে আজিমপুরের দিবা শাখার ওই জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে শনিবার প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। সেদিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অভিযোগের প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ার পর শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়।

গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কোচিংয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়। তবে ওই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয়ে রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ছাত্রীরা আজিমপুর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। একই দিনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও চাকরিচ্যুতির দাবি করেন।

সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন অভিভাবকরা। এক অভিভাবক শাহেদা আক্তার বলেন, সেই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তো এটা মানব না। আমরা স্থায়ী বহিষ্কার চেয়েছি। আমরা আবার আন্দোলনে নামব। এদিকে শিক্ষক মুরাদ হোসেন বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অভিযোগ করা হচ্ছে- এমন দাবি করছেন কিছু অভিভাবক ও ছাত্রী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close