নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ অক্টোবর, ২০২১

এত ত্যাগের পরও পদোন্নতি হয়নি

সাক্ষাৎকারে আবুল কালাম আজাদ, যুগ্মসচিব

সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন দেশ ও মানুষের সেবায়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন একাধিকবার। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার বাদীও ছিলেন যুগ্মসচিব ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। এত কিছুর পরও দুবার যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি হয়নি। শুধু তা-ই নয়, তার স্ত্রী শিল্প মন্ত্রণালয় থেকেও চাকরিচ্যুত হন। সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সদস্য (প্রশাসন) ও যুগ্মসচিব ড. মো. আবুল কালাম আজাদ।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পিএস মো. সাইফুল্লাহ পান্নার পদোন্নতি হলেও আমার পদোন্নতি হয়নি। অথচ আমি বঞ্চিত হলাম। আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হল সংসদ ভিপি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা ও বাকৃবির শাখার ভিপি ছিলাম।’

১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কথা উল্লেখ করেন ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনা ঈশ্বরদীতে পথসভা করতে গেলে তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা হামলা চালায় বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। জীবনের ভয়ে নেত্রীর সঙ্গীরা লুকিয়ে ছিলেন। তবে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনাকে নিরাপদে নাটোর রেলস্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিলাম। সন্ত্রাসীদের রুখতে পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করেছিলাম। এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করি।’

ড. আজাদ আরো বলেন, ‘১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে পাবনার কাশিনাথপুর মোড়ে ইউরিয়া সার সংকট নিয়ে শেখ হাসিনার পথসভায়ও বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। সে সময়ও শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী ছিলেন না। আমি গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার পাশে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া ২০০৫ সালে আমি ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে ছিলাম। সে বছরের ২৩ ডিসেম্বর সকালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনে জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ক্ষেতলাল পাইলট স্কুলে আজিজ মোল্লার গ্রুপ মারধর করে আটকে রেখেছে। তখন আমি চাকরির মায়া ত্যাগ করে ঘটনাস্থলে গিয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করি এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে বগুড়া পর্যন্ত পৌঁছে দিই। ওই ঘটনার পরের দিনই আমাকে রাঙামাটির পার্বত্য জেলার নানিয়ারচরে বদলি করা হয়। পরপর ৭৯ বার বদলি ও দুই বছর পদাবনত করে। শুধু বদলি করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া আমার বিরুদ্ধে ১৭টি বিভাগীয় মামলা করেছিলেন। সব সময় ন্যায়ের পক্ষে থাকায় ১৬টি মামলা থেকে অব্যাহতি পাই এবং সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব হতে ২২ বছর পেরিয়ে যায়।’

‘শেষ বয়সে এসেও যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো না চার বছরেও। অথচ বর্তমান সরকারে আমার দল (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close