রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

হাইপ্রেশার পাইপলাইন থেকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে নিহত ২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি দ্বিতীয়তলা ভবনে বিকট শব্দে তিতাস গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গ্যাস বিস্ফোরণে ওই ভবনে বসবাসরত দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো সাতজন। তিতাস গ্যাসের হাইপ্রেশার পাইপলাইন থেকে নেওয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল সোমবার ভোরে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় ঘটে এ দুর্ঘটনা।

নিহতরা হলেন মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর থানার কোমরপুর এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে শামিম (৩০) ও ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কয়া এলাকার রহিম বিশ্বাসের ছেলে হেলাল বিশ্বাস ওরফে রাকিব (২৫)। নিহত দুজনই স্থানীয় নেক্সট এক্সেসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় রাবেয়া আক্তার মিলি নামের এক আইনজীবীর দুইতলা বিল্ডিং রয়েছে। মহাসড়কের পাশ দিয়ে স্থাপিত তিতাস গ্যাসের হাইপ্রেশারের পাইপলাইন থেকে অবৈধভাবে ওই বিল্ডিংটিতে গ্যাসের সংযোগ নেন রাবেয়া আক্তার মিলি। হাইপ্রেশারের পাইপলাইন থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ নেয়াটা পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ। ওই বিল্ডিংটি স্থানীয় নেক্সট এক্সেসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। শবেবরাতের কারণে সব মিল-কারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের প্রেশার ছিল বেশি। ভোর সোয়া ৩টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে বিল্ডিংয়ের পুরো দেয়াল ভেঙে প্রায় ৫০ থেকে ৩০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। এ সময় পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে।

পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন এবং তিনজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের মধ্যে শামিম ও হেলাল বিশ্বাস ওরফে রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

আহতরা হলেন নেক্সট এক্সেসরিস লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিক তরিকুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, হযরত আলী, আরিফ, আনোয়ার হোসেন, ফারুক মিয়া, আরিফুর রহমান। আহতদের মধ্যে লিয়াকত ও আরিফের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক রাবেয়া আক্তার মিলি বলেন, অন্যরা যেভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে আমিও সেভাবেই নিয়েছি। তবে আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁও জোনের সুপার ভাইজার ইসমাইল হোসেন বলেন, আগেও এ ধরনের আরো বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এক হলো হাইপ্রেশার লাইন থেকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেয়া। আবার শবেবরাত উপলক্ষে সব ধরনের মিল-কারখানা বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে গ্যাসের প্রেশার ছিল বেশি। হয়তো বিল্ডিংয়ের ভেতরে গ্যাস ছড়িয়ে ছিল। আগুনের সংস্পর্শে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। খবর পেয়ে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ ও কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রফিকুল হক বলেন, দুজন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই তাদের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close