চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০১৭

লামায় গাছ কেটে জমি দখল হুমকির মুখে রাবার শিল্পে বিনিয়োগ

পার্বত্য চট্টগ্রামের লামায় রাবার গাছের পাশাপাশি সৃজিত ফলদ ও বনজ গাছ কেটে সাবাড়ের ঘটনা ঘটছে। রাবার বাগানের জমি দখল, ভাংচুর, প্রকল্প মালিক ও শ্রমিকদের উপর অব্যাহত হুমকির কারণে চরম বেকায়দায় পড়েছে উপজেলার সরই ও ডলুছড়ি মৌজায় ৬৪ টি রাবার প্লটের ১৬’শ একর জমিতে অন্তত পক্ষে ৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগকারীগণ। জীবনের নিরাপত্তা ও দখলবাজ পাহাড়ি চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বান্দরবান জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করেছেন বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, ১৯৯৩-৯৪ সালে সরকারি নীতিমালা অনুসারে ৩০১ সরই ও ৩০৩ ডলুছড়ি মৌজায় ২৫ একর করে ৬৪ ব্যক্তি মালিকানায় ১৬’শ একর জমি লিজ নিয়ে সমন্বিত রাবার চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকল্প ‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড গড়ে তুলেন। লিজকৃত জমিতে রাবার বাগানের পাশাপাশি ফলদ আম, জলপাই, লিচু, জাম্বুরা ও বনজ গাছ রোপন করা হয়। এই রাবার বাগানে প্রতি বছর প্রায় ১০০/১২০ টন সাদা সোনা নামে খ্যাত কাঁচা রাবারের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখছে লামা রাবার ইন্ড্রাষ্ট্রিজ লি.।

অভিযোগে জানা গেছে, গত এক বছর ধরে পুলু ঝিরি আগা রাবার হোল্ডিং নং ৬৯-এ, দাগ নং ১০৫৫/৪ পয়েন্টে ৯/১০টি ত্রিপুরা ও মুরুং পরিবার টিন দিয়ে নতুন ঘর বেধেঁছে। একইভাবে ৯২ নং হোল্ডিং-এ ১০৫৫/১৫ নং দাগের কিছু অংশে ঢেঁকিছড়ার কয়েকজন নতুন করে ঘর তৈরি করে জমি দখল করতে চাচ্ছে। ডলুছড়ি মৌজায় প্রায় সাড়ে ৫’শ আমের চারাগাছ কেটে ২০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি করে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করেছে।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির এমডি জহিরুল ইসলাম বলেন, সরই ও ডলুছড়ি মৌজায় ৬৪ টি রাবার প্লটের ১৬’শ একর জমিতে অন্তত ৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। পাহাড়ীদের সন্ত্রাসমুলক কর্মকা-ের প্রতিকার চেয়ে আমরা ৬ মাস আগে বান্দরবান জেলা প্রশাসকসহ বোয়াং সার্কেল, সেনা ক্যাম্প, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।

সরই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ বাগান সৃজন করে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ অব্যাহত রেখেছে। কখনও ভাসমান ত্রিপুরা ও মুরুং উপজাতি এখানে ছিল না।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লি. ম্যানেজার আরিফ হোসেন বলেন, ত্রিপুরা ও মুরুং সম্প্রদায় কখনও একসাথে বসবাস করে না। এখানে তারা যৌথভাবে রাবার ইন্ডাস্ট্রির ক্ষয়ক্ষতি ও জমি জবর দখল করে নতুন পাড়া সৃষ্টির পায়তারা করছে।

সরেজমিনে জানা যায়, ৩০৩ ডলুছড়ি মৌজার হেডম্যান যোহন ত্রিপুরার ইন্দনে তার সহযোগী কাইংপ্রোসহ অন্যান্যরা লীজ প্রাপ্ত জমি দখলের চেষ্টা চলছে।

আরো জানা যায়, সর্বশেষ ৪ মার্চ চম্পাতলি আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগের বিষয়ে ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে মৌজা হেডম্যান ও উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক বসে। বৈঠকে দখলের অভিযুক্তরা কোন কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ জমির দলিলপত্র পর্যালোচনা করে অনুপ্রবেশে বিরত থাকার নির্দেশ দিলেও তা না মেনে জবর-দখল সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।

দখল চেষ্টার অভিযুক্ত কাদর মুরুং, কামলাই মুরুং ও পিতর ত্রিপুরা জানায়, ৩/৪ মাস আগে তারা অন্য পাড়া থেকে এই স্থানে এসেছে। এই পাড়ার নাম দিয়েছে নোয়া পাড়া। এখানে বসবাসরতরা পূর্বে গজালিয়া ইউনিয়নের আকিরাম পাড়া, টংকবতী, ঢেঁকিছড়া নতুন ও পুরাতন পাড়া, চিউর ছড়া পাড়ায় বাস করত। তাদের দুই স্থানেই ঘর আছে বলে জানায় তারা।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু বলেন, আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। লামা কাননগো ঘটনাস্থল তদন্ত করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist