তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ০৩ জুন, ২০২৩

বরগুনার তালতলী

বছরজুড়ে পায়রার ভাঙন নিঃস্ব কয়েকশ পরিবার

বরগুনার তালতলীতে পায়রা (বলেশ্বর) নদীতে বছরজুড়েই লেগে আছে ভাঙন। ফলে সব মৌসুমেই ভাঙন আতঙ্কে এখানকার নদী পাড়ের মানুষেরা। ইতিমধ্যে ভাঙনের কবলে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, ফলের বাগান সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েকশ পরিবার। শেষ পর্যন্ত এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে তারা।

ভাঙন প্রতিরোধের টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ জন্য সিআইপি-২ প্রকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। খুব দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া, নলবুনিয়া ও জয়ালভাঙ্গা গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, এসব এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বসতবাড়ি হারিয়েছেন। এখনও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে দুইশতাধিক পরিবার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ অঞ্চলে প্রায় ৫০ বছর ধরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে দুই হাজার একর ফসলি জমি। গাছপালা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ একধিক ধর্মীয় স্থাপনা নদীগর্ভে প্রতি বছরই হারিয়ে যাচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধের টেকসই বেড়িবাঁধের প্রত্যাশা তাদের। তাই তো শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা বসতবাড়ি হারানো নলবুনিয়া গ্রামের এমাদুল মিয়া বলেন, শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা মৌসুমে পায়রার ভাঙন থেমে নেই। আমাদের বসতভিটা নদীতে ভেঙে নিঃস্ব হয়ে এখন বেড়িবাঁধের পাশে কোনোমতে ঠাঁই নিয়েছি। আমাদের মতো নিঃস্ব হয়ে অনেকেই পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ও সরকারি আবাসনে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ কর্মের তাগিদে শহরে চলে গেছেন পরিবার পরিজন নিয়ে।

জয়ালভাঙ্গা গ্রামের আলেয়া বেগম বলেন, আমার জমিজমা ঘরবাড়ি সবকিছু নদীতে ভেসে গেছে। রাস্তার পাশে ছাপড়া দিয়ে পোলাপান নিয়ে কোনোমতে জীবন যাপন করছি।

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া বলেন, একদিকে নদীর ভাঙনের কাছে আমরা অসহায়; অপরদিকে এখনকার মানুষগুলোকে সিডর, আইলা, আম্পান, বুলবুল, ফনি মতো প্রকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। গত বছরের জুলাইয়ে এখানকার নদীরক্ষার বাঁধ ভেঙে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়। স্থানীয়ভাবে ভাঙন কবলিতদের রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য সরকারিভাবে বড় পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

বরগুনার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, আমাদের সিআইপি-২ প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া আছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ভাঙন ঠেকানো যাবে। আশা করছি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

তালতলী ইউএনও সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ভাঙনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close