ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২২

‘পুরো হালদা কাঁড়ি ফালাইয়ুম’

বালু ব্যবসায়ীর হুমকি

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। আর এ নদীতে চলছে রাতের আঁধারে গোপনে বালু উত্তোলন। নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাধ্যমে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এসব কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর পাড়ের শতাধিক ঘরবাড়ি। গত ১০ বছরেই বিলীন হয়েছে দরবার চর, ফুল মিয়া সওদাগর চর, মিরাপাড়া চর এলাকাসহ প্রায় ২০০ শতক আবাদি জমির চর।

বালু উত্তোলনের খবর সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন সিন্ডিকেটের মূলহোতা মো. মহিউদ্দিন। হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওনে কন (আপনি কে)। সামনে আইয়ুন সরাসরি কথা খই। অনে আরে কিল্লাই ফোন দিতে লাইগ্গুন।’ জবাবে মহিউদ্দিনের কাছে বালু উত্তোলনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বালু নো, পুরো হালদা খালসহ কাঁড়ি ফালাইয়ুম।’ অর্থাৎ তিনি কেবল বালু-ই নয় প্রয়োজনে হলদা নদী পুরো কেটে ফেলবেন।’

তিনি সন্ত্রাসী ভঙ্গিতে আবারো বলেন, ‘হাটহাজারী ফটিকছড়িতে অনেক সাংবাদিক রয়েছে, কেউ তাকে ফোন করার সাহস পায় না। সামনে আসলে দেখে নিবেন।’

চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজ গেটের উত্তর পূর্ব পাশে তিন খালের মুখ এলাকায় প্রতিবছর মুন্সিমিয়া কলোনির উত্তর পাশে ফটিকছড়ির হালদা অংশ থেকে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত করে অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী কামালের সঙ্গে বালু ক্রেতা সেজে কথা বললে কতটুকু লাগবে জানতে চান। বালু প্রতি গাড়ি কত দামে বিক্রি করেন জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রতি গাড়ি ১৩০০ টাকা করে আর পরিবহন খরচ আলাদা দিতে হবে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বালু ব্যবসা কতদিন ধরে করেন জানতে চাইলে, তিনি খানিকটা হোঁচট খেয়ে যান। কথা পরিবর্তন করে তিনি বলেন, তিনি বালু তুলেন না কিনে এনে বিক্রি করেন। এর সঙ্গে মো. মাসুদ জড়িত বলে জানান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

নাজিরহাট এলাকার সওদাগর মো. ইয়াকুব বলেন, হালদার তীরে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার ব্লক নষ্ট হচ্ছে। নদীর পশ্চিমাংশে মানুষের শত শত কানি জমি তলিয়ে গেছে, রাস্তায় ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে, অবৈধ বালু সিন্ডিকেট আইনের আওতায় না আসার কারণে।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানি বলেন, আমি সাত মাস আগে যোগদান করেছি। এর মধ্যে এসিল্যান্ড বাদে কেবল আমি ১৬ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছি। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিব। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব, দরকার হলে রেগুলার মামলা হবে।

হাটহাজারী অংশে বালু মজুত করার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা হালদায় বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেছি। আমি ফটিকছড়ির ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close