মো. ফসিয়ার রহমান, পাইকগাছা (খুলনা)

  ১৮ আগস্ট, ২০২২

আমন চাষের মৌসুমে শ্রমিক সংকট

খুলনার পাইকগাছায় আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ফলে অনেকটা খরা দেখা দেয় বীজতলা নির্মাণে। কেউ বাড়তি খরচ করে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করেছেন। প্রচণ্ড খরার পর শ্রাবণের শেষ সপ্তাহে আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে রয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রোপা আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। তবে ধান রোপণের জন্য শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সময় মতো পানি না পাওয়ায় ধানের বীজতলা তেমন ভালো হয়নি। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহতের শঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি অফিস।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা গেছে, কৃষকেরা বৃষ্টির পানিতে জমি চাষ শুরু করেছেন। কেউ কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। আবার কেউ জমিতে চারা রোপণ করছেন।

গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক লিপটন সরদার বলেন, এ বছর খরার কারণে বীজতলা ভালো হয়নি। পানির অভাবে সময়মতো ধান লাগাতে পারিনি। সম্প্রতি অল্প বৃষ্টি হচ্ছে, সেই পানি দিয়ে চাষ দিয়ে রোপণ করছেন। ধান রোপণে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান রোপণ শুরু করি। এদিকে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। গত বছর ৫০০ টাকায় শ্রমিক পেলেও, এ বছর ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে মজুরি।

হরিঢালী ইউনিয়নের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের বীজতলায় চারা ভালো হয়নি। পরে আবার চারা তৈরি করে রোপণ করেছি। এখন বৃষ্টি হওয়ায় ধান রোপণ শুরু হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।

রাড়ুলী ইউনিয়নের কৃষক আ. রহিম বলেন, শ্রাবণ মাসের শুরুতে রোপা আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় দেরি হয়ে গেছে। ধান কাটার পর একই জমিতে সরিষা ও গম চাষও করি। কিন্তু দেরিতে ধান রোপণের কারণে সরিষা চাষ নিয়ে শঙ্কায় আছি।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডল্টন রায় বলেন, এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় কৃষক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উঁচু জমিতে যে আমন চাষ হয় ওই জমিতে সঠিকভাবে কৃষক চাষ করতে পরেননি। এ বছর চাষাবাদ দেরিতে হওয়ায় রবি ফসল নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এ বছর ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় রয়েছেন। কৃষকদের পরামর্শ দিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে বিঘাপ্রতি ৩০ মণ পর্যন্ত ধান পাওয়া সম্ভব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close