দুলাল মিয়া, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা)

  ১৩ আগস্ট, ২০২২

নাঙ্গলকোটে উপবৃত্তির ৫৭ লাখ টাকা গায়েব

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীদের ছয় মাসের উপবৃত্তি ও কিড অ্যালাউন্স (পোশাক ক্রয়) বাবদ অভিভাবকদের মোবাইলের নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৭ লাখ টাকা গায়েব হয়েছে। হ্যাকারদের মাধ্যমে এ টাকা নিয়ে গেছে নগদ কোম্পানি। না কি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা এ টাকা আত্মসাৎ করছেন- এমনই প্রশ্ন করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের জুনে উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির ১ হাজার টাকা এবং কিড অ্যালাউন্স বাবদ ৯০০ টাকা প্রদান করা হয়। এ টাকা অভিভাবকদের মোবাইল নম্বরে খোলা নগদ অ্যাকাউন্টে যায়। ওই টাকা তোলার মেয়াদ থাকে ১০ থেকে ১২ দিন। টাকাগুলো তুলতে একটু দেরি হলে অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায়। এভাবে গড়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষার্থীর টাকা নিয়ে যায়। যার মোট ৫৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে চক্রটি।

এ বিষয়ে বিভিন্ন গ্রামের ফারুক, বেলাল হোসেন, শরীফ ও কামালসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, উপবৃত্তি ও কীড এলাউন্স (পোশাক ক্রয়) বাবদ ১ হাজার ৯০০ টাকা মোবাইল নগদ একাউন্টে আসে। কিছুদিন পরে দেখি এ টাকা একাউন্টে নেই। কিছুই বুঝলাম না। হ্যাকারদের মাধ্যমে এ টাকা নিয়ে গেছে নগদ কোম্পানি। না কি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা এ টাকা আত্মসাৎ করছেন।

শিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর নগদ কোম্পানির (মোবাইল ব্যাংকিং) মাধ্যমে ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থী বাবদ উপবৃত্তির ৬০০ টাকা এবং কিড এলাউন্স বাবদ ৯০০ টাকা। এ টাকা গত ২৬ জুন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নগদ একাউন্টে যায়। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ের কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা স্থানীয় নগদ এজেন্ট থেকে টাকা উত্তোলন না করায়, তাদের উপবৃত্তি এবং কিড এলাউন্সের টাকা নগদ হিসাব থেকে উধাও হয়ে যায়।

অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিকট নিয়মিত দ্বারস্থ হয়েও টাকা উদ্ধারে কোন সমাধান খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রধান শিক্ষকরা গত মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের বিষয়টি জানালেও এর কোন জবাব এখনো পাননি বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন।

নগদ এর লাকসাম অফিসের টেরিটরি অফিসার আশিকুর রহমান অমিত বলেন, আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। অভিযোগ পেয়ে হেড অফিসে পাঠানোর পর যাচাই-বাছাই করে অনেকের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা শিক্ষা অফিসার মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যে সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি এবং কিড এলউন্সের টাকা পায়নি। এ তালিকা আমার কাছে আছে। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে উপজেলার কতজন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি এবং কিড এলাউন্সের টাকা পায়নি সে তালিকা আমার কাছে নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close