সিরাজগঞ্জ ও সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

  ২৩ জুন, ২০২২

সিরাজগঞ্জ-সুন্দরগঞ্জে ৮৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

অতিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীসহ অভ্যন্তরীণ নদণ্ডনদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা বন্যাকবলিত হচ্ছে। এতে বাড়িঘর ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এসব বিদ্যালয়ের কোনোটির চারদিকে পানি আবার কোনোটি পুরোপুরি ডুবে গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় আটটি, কাজিপুরে সাতটি এবং বেলকুচিতে ১০টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে এর সংখ্যা আরো বেশি বলে জানা গেছে। ওইসব এলাকায় এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার যে এলাকায় বিদ্যালয়ের আশপাশে উঁচু ভিটা আছে সেখানে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব এলাকায় উঁচুভিটা নেই, সেসব এলাকায় ক্লাস বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপরে কাজিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তার উপজেলায় এরই মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি উঠেছে। বন্যাকবলিত যে এলাকায় উঁচু ভিটা আছে, সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকিগুলোতে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বন্যাকবলিত এলাকার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, আমার উপজেলায় কোনো বিদ্যালয় এখনো বন্যাকবলিত হয়নি। তবে ২৫টি বিদ্যালয়ের চারদিকে পানি হয়েছে। এই বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ বলেন, আটটি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে পার পাচিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একটি বাড়ির প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়েছে এবং কেচুয়াহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪ হাজার পরিবার। বন্যার পানি উঠায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘর থেকে বের হতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসিরা।

সরেজমিনে গিয়ে দহবন্দ ইউনিয়নের চর উত্তর ধুমাইটারি, বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা, কিশামত সদর, বেলকা নওয়াবগঞ্জ, পূর্ব বেলকা, হরিপুর ইউনিয়নের চর চরিতা বাড়ি, রাঘব চর, চর হরিপুর ঘুরে দেখা গেছে, জরুরি প্রয়োজনে নৌকা বা কলাগাছের ভেলায় চড়ে বন্যাকবলিত লোকজন যাতায়াত করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মণ্ডল জানান, এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫০ পরিবারের প্রায় ১১ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি ইউনিয়নগুলো হচ্ছে উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, শ্রীপুর, চণ্ডিপুর ও কাপাসিয়া। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাশিদুল কবির জানান, পাট, আমন বীজতলা, আউশ, শাকসবজি, তিল, মরিচ ও চীনা বাদামসহ মোট ১ হাজার ১০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন উর রশিদ জানান, বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় উপজেলার ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদণ্ডআল-মারুফ জানান, গতকাল বুধবার বন্যাকবলিতদের মাঝে বিতরণের জন্য ২২ টন চাল সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close