শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ২১ জুন, ২০২২

কাঁঠালের দামে খুশি চাষি

ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকার উঁচু অঞ্চল, গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপন্ন হয়। গাজীপুর জেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের আড়ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে শ্রীপুরের জৈনাবাজার। প্রতি বছর কাঁঠালের মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমান।

সারা দিন কাঁঠাল কিনে রাতে ট্রাকে করে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কাঁঠাল বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁঠালের পাইকারি বাজারে এসে কাঁঠাল কিনে রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা শহরগুলোতে নিয়ে বিক্রি করে। এ অঞ্চলের কাঁঠাল খুবই সুস্বাদু হওয়ায় দেশের প্রায় সব জায়গায় চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। এখন ক্রেতাণ্ডবিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত এলাকার শ্রীপুর, মাস্টারবাড়ী, রাজাবাড়ী, গোসিঙ্গা, প্রহলাদপুর, রাজেন্দ্রপুর, বরমী, কাওরাইদ, কেওয়া, মাওনা ও জৈনাবাজার। এখন এসব বিভিন্ন বাজারে কাঁঠাল আসতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে শ্রীপুর উপজেলার কটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশেই জৈনাবাজারে কাঁঠালের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন কৃষকরা। বাজারে চারদিকে রসালো কাঁঠালের মণ্ডম মিষ্টি ঘ্রাণ। আর ছড়িয়ে আছে কাঁঠালভর্তি ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, রয়েছে ছোট-বড় পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান। কোথাও স্তূপ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন আকৃতির কাঁঠাল।

গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের স্থানীয় আড়তদার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমি অনেক দিন যাবৎ কাঁঠালের ব্যবসা করি। এবারে অন্যান্য বছরের তুলনায় কাঁঠালের ফলন একটু বেশি চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বর্তমানে প্রতিটি কাঁঠাল ৭০ থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এবার দাম একটু বেশি। তা ছাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাঁঠালের খাজনা একটু কম। দূরদূরান্ত থেকে পাইকার আসতে শুরু করেছে। তাই বিক্রেতারা পাচ্ছেন ভালো মূল্য। যত বেশি পাইকার আসবেন, দাম তত ভালো পাওয়া যাবে।

তেলীহাটি ইউনিয়নের তালতলী গ্রামের কাঁঠালচাষি রাকিব বলেন, তার বাগানে তিন শ কাঁঠালগাছ রয়েছে। এরই মধ্যে ৩৫টি মাঝারি আকারের কাঁঠাল ২৬০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। এ রকম বাজার থাকলে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

জৈনাবাজারের ইজারাদার নাঈম ইসলাম বলেন, মাত্র তিন সপ্তাহ হলো বাজার শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁঠাল আসতে শুরু করেছে। বাজারের খাজনা কম থাকায় দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন। এবার কাঁঠালপ্রতি খাজনা নেওয়া হচ্ছে দুই টাকা, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। বাজারে পাইকার থাকায় চাষিরা পাচ্ছেন কাঁঠালের ন্যায্যমূল্য।

শ্রীপুর উপজেলার কৃষি অফিসার মুয়ীদুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ৪৬ হাজার হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। এবার ৩৬৯০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষাবাদ হয়েছে। কাঁঠালের তেমন কোনো রোগবালাই হয় না, তবু কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা ও যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং সুষ্ঠু বাজারজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে চাষিরা কাঁঠালের ভালো দাম পাবেন বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close