শরীয়তপুর প্রতিনিধি

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২২

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ

প্রাথমিক শিক্ষা মহাপরিচালক বরাবর ভেদরগঞ্জের ২২ প্রধান শিক্ষকের লিখিত আবেদন

ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়ার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা মহাপরিচালক বরাবর উপজেলার ২২ জন প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেন।

সুলতানা রাজিয়া ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। এসব টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে গড়মিল হলে অফিস সহকারী খন্দকার আবু সালেহ মো. কামাল ও হিসাব সহকারী মো. লিখনকে অন্যত্র বদলি করে দেন।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয় সরকার। এ ছাড়া রুটিন মেরামতের জন্য ৮৮টি বিদ্যালয়ে ৪০ হাজার টাকা করে, ১৫০টি বিদ্যালয়ে সিøপ বাবদ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা করে এবং ৯৯টি বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক বাবদ ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয় সরকার।

শিক্ষকদের অভিযোগ, এসব বরাদ্দের বিল ভাউচার পাস করাতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া নির্ধারিত হারে টাকা দাবি করেন। তিনি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া প্রতিটি স্কুল থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে, ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া প্রতিটি স্কুল থেকে ৪০০ টাকা করে, সিøপের বরাদ্দের প্রতিটি স্কুল থেকে ৮০০ টাকা এবং ওয়াশ-ব্লক থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নির্ধারণ করেন। সদ্য বদলি হওয়া হিসাব সহকারী লিখন মিয়ার কাছে নির্ধারিত হারে টাকা দিয়ে স্কুলের বিল ভাউচার পাস করাতে বাধ্য হয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা। এভাবে তিনি প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন।

এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৪৮টি বিদ্যালয় মেরামত, রিপিয়ারিং, সিøপ ও ওয়াশব্লকের বরাদ্দ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার রাজিয়া সুলতানা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আস্থাভাজন হওয়ায় তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শিক্ষকরা সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষকদের। শিক্ষা অফিসারের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে উপজেলার ৩নং রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক সুজল, প্রধান শিক্ষক মহসীন উজ্জামান, অলিউল্লাহ বেপারী, মনিরুল ইসলাম, আলমগীর মিয়া, মুহাম্মদ আলমগীর, রেজাউল করিমসহ ২২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সম্প্রতি মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সম্প্রতি বদলি হওয়া হিসাব সহকারী লিখন মিয়া বর্তমানে গোসাইরহাট উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই তো একমত হয়েই টাকা উত্তোলন করেছে। আমার কোনো দোষ নেই।’ অভিযুক্ত ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, ‘এসব বিষয় সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।’ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close