মেহেরপুর প্রতিনিধি

  ২০ অক্টোবর, ২০২১

১৬ বছরেও চালু হয়নি বিদ্যালয়

রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়

মেহেরপুরের মুজিবনগরে রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিদ্যালয়টি ১৬ বছরেও চালু হয়নি। তবে মামলা জটিলতায় বিদ্যালয়টি দেড় যুগের কাছাকাছি সময় বন্ধ রয়েছে। ফলে রশিকপুরসহ আশপাশের গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করতে যেতে হয় পাঁচ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গার নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভৈরব পার হয়ে দুই কিলোমিটার বাগোয়ান মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং তিন কিলোমিটার দূরে টেংরামারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। চালু না হওয়ায় বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র চুরি ও ভবনের ভেতরে রাতের আঁধারে বসে মাদকের আড্ডা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চুরি হয়েছে বিদ্যালয়টির আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক পাখা, সুইচ, জানালার গ্রিল। আর রাতের বেলায় বসে মাদকসেবীদের আড্ডা।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে সেকেন্ডারি এডুকেশন বিভাগ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে ওই বিদ্যালয় ভবন। বিদ্যালয়টির নাম দেওয়া হয় রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সুলতান শেখের স্ত্রী আম্মাতন নেছা, আমির শেখ এবং রতন শেখ জমি দান করেছিলেন। আম্মাতন নেছার জমির পরিবর্তে অন্যত্র স্কুল পরিচালনা কমিটির আবাদি জমি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৎকালীন স্কুল কমিটি জমি না দেওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ কারণে জমিদাতা আম্মাতন নেছা বাদী হয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।

জমির মালিক আম্মাতন নেছা বলেন, তিন বিঘা আম বাগানের গাছ কেটে আমি বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য জমি দিয়েছিলাম। তৎকালীন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে কথা ছিল ওই জমির বদলে মাঠে আবাদ করা যায় এমন পাঁচ বিঘা জমি দিবে তারা। কিন্তু বিদ্যালয় নির্মাণ করার পরে জমি না পাওয়ায় ২০০৪ সালে আদালতে মামলা করি। বাসিন্দা মাহাবুব শেখ বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্ট করে দূরের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। সামান্য একটা সমস্যার কারণ দেখিয়ে ১৬ বছর ধরে বিদ্যালয়টি চালু করা হয়নি।

নাবিল আহমেদ নামের এক ছাত্র জানায়, গ্রামের স্কুল চালু না হওয়ায় তাকে ভৈরব নদ পেরিয়ে বাগোয়ানে যেতে হয় লেখাপড়ার জন্য। প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার তাকে যাতায়াত করতে হয়। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে এম মামুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন জানান, আমি নতুন এসেছি এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত নন। তবে বিদ্যালয়টি যাতে চালু হয় সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করবেন বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টি চালু করার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close