নওগাঁ প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০২০

করোনায় দুর্ভোগে নওগাঁর নিম্নআয়ের মানুষ

করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। সারা দেশে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের জনসমাগম নিষেধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা ও কোচিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতার জন্য মাস্ক ও জীবাণুমুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে। জরুরি কোনো কাজ ছাড়া আগামী ১৪ দিন রাস্তাঘাটে মানুষকে না বেরোনোর জন্য বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য।

গত চার দিন থেকে নওগাঁর রাস্তাঘাটে যানবাহন, অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল চলাচল অনেকটা কমে গেছে। শহরে রাস্তাঘাটে অটোরিকশা ও ভ্যান তেমন চোখে পড়ছে না। আতঙ্কে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষরা বিপাকে পড়েছেন। আয় রোজগারের কোনো পথ না থাকায় পেটের দায়ে তারা ঘরে থাকতেও পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ভাড়ার আসায় নওগাঁ সদর হাসপাতালের গেটে সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন রিকশাচালক।

তাদের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলার কানমটকা গ্রামের রিকশাচালক বয়োজ্যেষ্ঠ আজিজার রহমান বলেন, বাড়িতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। প্রতিদিন খাওয়া খরচ প্রায় ২০০ টাকা। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছি ও সংসারে কাজে টাকা ব্যয় করেছেন। সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া পেতাম। গত দুই দিন থেকে রাস্তায় বের না হওয়ার জন্য পুলিশ মাইকিং করছে। এজন্য ভ্যান নিয়ে বের হতে পারিনি।

তিনি বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। বাড়িতে কিস্তির টাকা নিতে গিয়েছিল। জানিয়ে দিয়েছি কয়েক দিন পর ছাড়া কোনো টাকা দিতে পারব না। করোনার কারণে বাহিরে মানুষ তেমন বের হচ্ছে না। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। যা একটু জমিয়েছিলাম ঘরে বসে থেকে শেষ হওয়ার উপক্রম। এছাড়া ভয়ে বাহিরে বেরোতে পারিনি। পুলিশ পিটালে-পিটুনি খাওয়া যাবে। কিন্তু রিকশা ভেঙে দিলে তো সহজে কিনতে পারব না। এই ভয়ে রিকশা বের করিনি।

জেলার মহাদেবপুর উপজেলার আন্ধারকোটা গ্রামে রিকশাচালক রকিব উদ্দিন বলেন, এনজিও থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দুই মাস আগে আটোরিকশা কিনেছি। প্রতি মাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। গত চার দিন রিকশা বের করতে পারিনি। এলাকার রোগী খুব করে জোরাজুরি করায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। ভাইরাসের কারণে রাস্তাঘাটে গাড়ি কম চলছে। মানুষের আনাগোনাও কম। রিকশা বের করতে পারছিলাম না। রিকশা পড়ে থাকলে আবার ব্যাটারির সমস্যা হবে। তাই একটু বের করেছি। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০০ টাকা ভাড়া পেয়েছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close