রায়হান সিকদার, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

লোহাগাড়ায় টংকাবতী খালে বিলীন সড়ক ও বসতবাড়ি

* শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বাস করছে * ভাঙন আতঙ্কে আরো কয়েকশ পরিবার

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা রাজঘাটা মাঝেরপাড়া এলাকার টংকাবতী খালের ভাঙন বেড়েই চলছে। ভাঙনে বিলীন হতে চলছে ফসলি জমি, সড়ক ও শত শত বসতবাড়ি। ছোট হয়ে আসছে লোহাগাড়ার মানচিত্র। ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শত শত বসতবাড়ি।

টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি, খালের গভীরতা বেশি হওয়ায় স্রোতে খালের ভাঙন বৃদ্ধি হতে শুরু করছে। ভাঙন যত বৃদ্ধি হচ্ছে অনেকে হারাতে বসেছে বসতবাড়ি। টংকবতী খালের ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়েছে ওই এলাকার বদিউল আলম, মো. ইসমাঈল, ওয়াজেদ আলী ও আকরাম আলীসহ প্রায় শতাধিক পরিবার এখনো খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরম্বা রাজঘাটা মাঝেরপাড়া এলাকায় টানা বর্ষণে টংকাবতী খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বসতবাড়ি। বসতবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ছয়-সাতটি পরিবার। ওই এলাকার ষাটোর্ধ্ব মহিলা রহিমা খাতুন বলেন, গত কয়েক বছরের ভাঙনে শত শত বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। হারিয়েছে অনেকের ঘরবাড়ি।

স্থানীয়রা বলেন, টংকাবতী খাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। ভাঙন রোধে জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নিলেও কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয়রা আরো বলেন, স্থানীয় এমপিও ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছেন। বসতবাড়ি হারনো খাইরুন্নেছা বলেন, ভাঙনে সব শেষ করে দিয়েছে। নিয়ে গেছে বসতবাড়িতে থাকা সবকিছু। কোনোমতে সন্তানদের নিয়ে জানে বেঁচে আছি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা আসতেন, এখন আর সাংবাদিক ছাড়া কেউ আসে না। স্বামীর শেষ সম্বলটুকুও খালে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অন্যের ঘরের উঠোনে ঠাঁই হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দা প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, চরম্বা রাজঘাটা মাঝেরপাড়া এলাকায় টংকাবতী খালের যেখানে ভাঙন হয়েছে সেখানে ব্লক স্থাপন করে ভাঙন রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আসন্ন বর্ষায় আরো শত শত বসতবাড়ি খলের গর্বে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি স্থানীয় এমপি ও জনপ্রতিনিধিদের ভাঙন রোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। চরম্বা ইউপি সদস্য মো. এনামুল হক বলেন, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বস্ত করেন। টংকাবতী খালের পানির গতিপথ পরিবর্তন না করলে ব্লক বসিয়েও ভাঙন রোধ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার শফিকুর রহমান বলেন, বর্ষার শুরুতে ভারী বর্ষণে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকায় খালের ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টংকাবতী খালের ভাঙনে অনেকে বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙন রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় এমপিকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরিষদে খাল ভাঙন রোধের জন্য কোনো প্রকার বরাদ্ধ নেই। লোহাগাড়ার ইউএনও আবু আসলাম বলেন, ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close