আবুজার বাবলা, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

  ০৮ মে, ২০১৮

শ্রীমঙ্গলে সওজের ২২ লাখ টাকা জলে!

শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া-শমশেরনগর সড়কের শ্রীমঙ্গল শহরের রেলক্রসিং থেকে মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জি পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার জরাজীর্ণ সংস্কার কাজ অবশেষে শুরু হয়েছে। তবে সংস্কার কাজে সঠিক অ্যাসেসমেন্ট না হওয়া ও বৃষ্টির কারণে সংস্কার কাজের প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২২ লাখ টাকাই জলে যেতে বসেছে।

সরেজমিন জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল সোমবার সকাল থেকে এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে সংস্কার শুরু হয়েছে পাঁচ মাস আগের অ্যাসেসমেন্ট অনুসারে। এর মধ্যে বৃষ্টির কারণে সেখানে অসংখ্য বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, কার্যাদেশ অনুযায়ী সংস্কার করা হবে। এর বাইরে সৃষ্ট নতুন নতুন বড় গর্ত সংস্কার করা যাচ্ছে না। এ কারণে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সড়ক সংস্কার করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৪০০ মিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। কাজটি করছেন মেসার্স সজিব রঞ্জন দাশ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া-শমশেরনগর সড়কের ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৮, ৩৯ ও ৪১তম কিলোমিটার মাইল পোস্টের বিভিন্ন স্থানে গর্তের ৭ হাজার ৬০০ স্কয়ার মিটার সড়ক সংস্কারের কাজের কার্যাদেশ পান।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথের শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া সড়কটি সংস্কার অভাবে বেহাল ছিল। সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে মৌলভীবাজর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া সড়কের শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির জানকি ছড়া ব্রিজ পর্যন্ত ২৫টি স্পটে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর চার-পাঁচ দিনের মাথায় শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ সড়কের রেলক্রসিং থেকে গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট পর্যন্ত রাস্তার পিচ উঠে যাচ্ছে।

গত রোববার সরেজমিন শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ সড়কের বিজিবি ক্যাম্প, বিটিআরআই মোড়, টি-রিসোর্ট ও গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও কমলগঞ্জের হিড বাংলাদেশ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন সড়কের ভাঙাচোরা বড় বড় গর্ত থাকা বিভিন্ন অংশের ফেলে রেখে সংস্কার কাজ শেষ করেছেন। গর্ত ভরাটে পাথরের সঙ্গে ভাঙা ইট ও নিন্মমানের কংক্রিট মিশ্রণ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিটুমিনের আস্তরণ (কার্পেটিং) দেওয়ার কথা থাকলেও অল্প বিটুমিন ফেলে বালুর আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়র বলছেন, পুরো রাস্তার বড় বড় গর্তগুলো ফেলে রেখে কিছু কিছু অংশে মেরামত করায় লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না উল্টো সরকারের ২২ লাখ টাকা জলেই যাচ্ছে।

সরেজমিন সওজের ঊর্ধ্বতন কাউকে পাওয়া না গেলেও সেখানে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী খোকন মিয়াসহ দুইজনকে দেখা যায়। খোকন মিয়া বলেন, ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট তপন বিকাশ দেব এ কাজের তদারকি করছেন। তার পাশাপাশি সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামও কাজের দেখভাল করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাইট ওয়ার্কার আলী হোসেন বলেন, শিডিউলের মেজারমেন্ট অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। যেসব বড় গর্ত দেখছেন তা শিডিউলের মেজারমেন্টে নেই। যে কারণে আমরা এসব গর্তের মেরামতের কাজ করতে পারছি না।

শহরতলীর ভানুগাছ সড়কের টি-রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়াম এলাকায় সড়কের কাজে নিয়োজিত সড়ক ও জনপথের রোলার অপারেটর মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথের ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট তপন বিকাশ দেব বলেন, শিডিউল অনুযায়ী সড়কের ২৫টি স্পটে মোট এক হাজার ৪০০ মিটার সংস্কারকাজ হচ্ছে। এর বাইরে অনেক ছোট বড় গর্ত থাকলেও শিডিউলে উল্লেখ না থাকায় সেসব গর্ত ফেলে রেখেই কাজ শেষ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারী বর্ষণে পুরো রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শিডিউলে না থাকলে ঠিকাদার কিভাবে কাজ করবে?

মৌলভীবাজার সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেব নাথ বলেন, পাঁচ মাস আগে এ সড়ক মেরামতের অ্যাসেসমেন্ট করা হয়। তাই চলতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এখন নতুন নতুন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারের কাজ ঠিকাদার করুক। বাকি কাজগুলো আমরা ডিপার্টমেন্টালি রুটিন মেইনটেনেন্সের মাধ্যমে ইট বালি দিয়ে ঠিক রাখার চেষ্টা করব। তিনি আরো বলেন, ‘এই সড়কের জন্য এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকার ডিপিডি প্ল্যানিং কমিশনের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানো হয়েছে। জুনের মধ্যে পাস হয়ে গেলে আগামী বছরের শুরুতে কাজ শুরু করা যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist