ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

বাংলাদেশের মেয়েদের ধবলধোলাই

হতশ্রী পারফরম্যান্সে বিস্মিত জ্যোতি

শক্তি-সামর্থ্যে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তাদের সঙ্গে বিন্দুমাত্র লড়াই করা যাবে না- এমন করুণ অবস্থা ছিল বলে মনে করেন না নিগার সুলতানা জ্যোতি। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, নিজেদের সামর্থ্যরে ১০ শতাংশও মেলে ধরতে পারেননি খেলোয়াড়রা। গতকাল বুধবার মিরপুরে তৃতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে হেরে ওয়ানডে সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হোয়াটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। হারের চেয়েও হারের ধরনগুলো ছিল পীড়াদায়ক। তিন ম্যাচের কোনোটিতেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা ১০০ রান করতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজের পর এবার দুই দলের সামনে টি-টোয়েন্টি লড়াই। আগামী ৩১ মার্চ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া। ২ এপ্রিল দ্বিতীয়, ৪ এপ্রিল হবে শেষ ম্যাচ।

প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ২১৩ রানে আটকে নিজেরা গুটিয়ে যান ৯৫ রান। পরের দুই ম্যাচেই আগে ব্যাটিং পায় স্বাগতিক দল। দ্বিতীয় ম্যাচে ৯৭ রানে গুটিয়ে হারে ৬ উইকেটে। গতকাল শেষ ওয়ানডেতে জ্যোতিরা করেন ৮৯ রান। প্রায় ৩২ ওভার আগে ওই রান পেরিয়ে ম্যাচ জিতে যায় অ্যালিসা হিলির দল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে একদম আত্মপক্ষ সমর্থনের দিকে যাননি জ্যোতি। নিজেদের সামর্থ্য মেলে ধরতে না পারায় প্রকাশ করেছেন বিস্ময়, ‘১০ শতাংশও না (সামর্থ্য মেলে ধরা)। কারণ আমি নিজেও পুরোপুরি বিস্মিত। কারণ গত ৬ মাসে যেভাবে ক্রিকেট খেলেছি, এটা একেবারেই অমন না। পুরো দল ব্যর্থ। দুয়েকটা দিক ভুল হলে তবুও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু পুরো দল ভিন্ন ধরনের ক্রিকেট খেলছে। মনে হচ্ছে যে ব্যাকফুটে রাখছে, মনে হয় যে সামর্থ্যের ১০ ভাগও খেলতে পারিনি।

তবে কেন এমনটা হলো? অস্ট্রেলিয়ার মতন শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে প্রস্তুতির ঘাটতিও দেখছেন না তিনি, প্রস্তুতি অনেক ভালো নিয়েছি। অনুশীলনে এক ধরনের মেন্টালিটি নিয়ে করছেন, এসে আরেকভাবে অ্যাপ্লাই করছেন, তখন কঠিন হয়ে যায়। কোচ বলেন বা অধিনায়ক হিসেবে বলেন, যখন দেখি খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসী, প্রস্তুতি ম্যাচে রান করছে, অনুশীলনে নিখুঁত ব্যাটিং করছে, এরপর যখন ভিন্ন ভাবে খেলছে- তখন আর কিছু করার থাকে না আমাদেরও। প্রস্তুতিতে সমস্যা ছিল বলে মনে হয় না। সামর্থ্যের এতটুকু দিয়েও খেলতে পারিনি আমরা। জ্যোতির মনে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামার আগে মানসিকভাবে হয়ত যথেষ্ট শক্তিশালী ছিলেন না তারা, ‘মনে হয় মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। কারণ দক্ষতা অনুযায়ী তো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকত, তাহলে তো আগে ম্যাচ জিততে পারত না। আমি জানি না, সবার মধ্যে কী কাজ করছে। আমি তো সবাইকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেন জানি সবাই ব্যাকফুটে ছিল প্রথম ম্যাচ থেকেই। সেখান থেকে খেলোয়াড়রা আর ফিরতে পারেনি। আমরা জানি, যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী খেলা, নিজেদের শক্তি অনুযায়ী খেলা। সেখান থেকে একেবারে ভিন্ন খেলেছে।

মামুলি রান তাড়ায় দারুণ শুরু পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার অ্যালিসা হিলি আর পহবি লিচফিল্ড মিলে ৮ ওভারে তুলেন ৪৩ রান। ১২ করা লিচফিল্ডকে আউট করে প্রথম উইকেট নেন সুলতানা খাতুন। হিলি চালিয়ে যান। দলকে অর্ধশতক পার করে রাবেয়া খাতুনের লেগ স্পিনে এলবিডব্লিউতে কাবু হয়ে থামেন তিনি। তবে তাতে ম্যাচে কোনো প্রভাব ছিল না। বোলিংয়ে ২ উইকেট নেওয়া পেরি ব্যাট হাতেও রাখেন অবদান। বেথ মুনিকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রানের জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি। পেরি অপরাজিত ছিলেন ২৮ বলে ২৭ রানে। মুনি করেন ২২ বলে ২১ রান। টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে আগের দুই ম্যাচের মতোই চলে উইকেট পতনের মিছিল। দ্বিতীয় ওভারে এলিসা পেরির শিকার হন সুমাইয়া আক্তার। পরের ওভারে ফারজানা হক পিংকিকে তুলে নেন কিম গার্থ। তিনে নামা মুরশিদা খাতুন টিকে থাকার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু বেশিক্ষণ সামলাতে পারেননি অজি বোলিং। পেরির বলে ক্যাচ দিয়ে তার বিদায় ২১ বলে ৮ রান করে।

অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি চেষ্টা চালিয়েছেন কিছুটা। সঙ্গী পাননি সেভাবে। রিতু মনি, ফাহিমা খাতুনরা ফেরেন তড়িঘড়ি। ১৬ করে থিতু হওয়া জ্যোতি যখন মলিনিউক্সের বলে আউট হন তখন ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনা স্বাগতিক দল। প্রথম ৭ ব্যাটারের ছয়জনই আউট হন সিঙ্গেল ফিগারে। বাংলাদেশের রান একশোর কাছে যায় টেল এন্ডারদের ব্যাটে। স্বর্ণা আক্তার, সুলতানা খাতুন আর মারুফা আক্তার যান দুই অঙ্কে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close