ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৫ জুন, ২০১৯

যুবরাজই সৌম্যর অনুপ্রেরণা

সৌম্য সরকারের ই-মেইল ঠিকানায় কেন ১২১২ সংখ্যা, সেটির রহস্য বলছিলেন একবার, ‘যুবরাজ সিংয়ের জার্সি নম্বর ১২। তিনি আমার অসম্ভব প্রিয় এক ব্যাটসম্যান। ১২১২ এসেছে সেখান থেকেই।’ শুধু ই-মেইল ঠিকানাই নয়, যুবরাজের প্রতি তার এতটাই ভালো লাগা, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলার সময় ব্যবহার করেছেন ১২ নম্বর জার্সি। পরে বিকেএসপির ক্যাডেট নম্বর ৪৫৯-এর সঙ্গে মিলিয়ে জার্সি নম্বর ৫৯ করেছেন।

একটা সময় স্বপ্ন দেখেছেন, হলে যুবরাজের মতোই ব্যাটসম্যান হবেন, যিনি ব্যাটে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। কদিন আগে প্রিয় ব্যাটসম্যান যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন, ব্রিস্টলে বসে সৌম্যও তাকে সম্মান জানালেন। ২০১৬ এশিয়া কাপে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুমের সামনে তোলা যুবরাজের সঙ্গে একটা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বাংলাদেশ ওপেনার লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ যুবি পাজি। আমার দেখা আপনিই সেরা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সবসময়ই আপনার স্টাইল, ব্যাটিং টেকনিক দেখে শিখেছি।’

যুবরাজের আর কী কী ভালো লাগে, অতি সম্প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি দৈনিকের ক্রীড়া প্রতিবেদক সৌম্যর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসছিলেন তিনি। যাকে আদর্শ মানেন, তাকে নিয়ে বলতে তো ভালো লাগারই কথা। সেই ভালো লাগা নিয়েই সৌম্য ওই প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্টাইল কিংবা ব্যাটিং টেকনিকের কথা ফেসবুকেই লিখেছি। তার পাওয়ার হিটিংয়ের সামর্থ্য তিন সংস্করণেই দেখিয়েছেন। মানুষ হিসেবেও তিনি অসাধারণ, অনেক মজা-রসিকতা করতে পছন্দ করেন। এটা বলব না যে তিনি স্ট্রোক খেলেন বলে আমিও খেলি। তবে হ্যাঁ, যেটা বললাম, তার ব্যাটিং ভীষণ ভালো লাগত। এখন পর্যন্ত তিনবার দেখা হয়েছে। খুব যে বেশি কথা বলেছি, তা নয়। দূর থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়।’

ব্রিস্টল থেকে বুধবার দুপুরে টন্টনে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ডে তিন জাতির সিরিজে দুর্দান্ত খেলার পর তার লক্ষ্য বিশ্বকাপটা রাঙানো। দলকে ভালো শুরু এনে দিতে দুটি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তবে ৪২, ২৫, ২ এমন ইনিংসে সৌম্য নিজেই খুশি হতে পারছেন না। এখানেও তাকে অনুপ্রাণিত করছেন যুবরাজ, ‘তিনি বড় খেলোয়াড় হয়েছেন বড় মঞ্চে ভালো খেলেছেন বলে।’ বড় টুর্নামেন্ট এলেই দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছেন সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান। ২০০০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হয়ে যার শুরু। একই বছর আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ (বর্তমানে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১ ওভারে সেই ৬টি ছক্কা। আর ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। মরণব্যাধি ক্যানসারকেও জয় করেছেন যুবরাজ। সৌম্যর কাছে তাই যুবরাজই সবচেয়ে বড় যোদ্ধা।

টন্টনে পৌঁছানোর পর যুবরাজের পরামর্শগুলোই বারবার মনে পড়েছে সৌম্যের, ‘এর আগে যে কবার দেখা হয়েছে, বলেছেন, যত চাপ আসবে তত শান্ত থাকবি। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখবি। আর তুই যে কোনো বলে ছক্কা মারতে পারিস, এটা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করবি।’

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা যুবরাজের ক্যারিয়ারটা মণি-মুক্তায় খচিত। সৌম্যর ক্যারিয়ার এতটা পূর্ণ হবে কি না, এখনই বলার উপায় নেই। আপাতত ক্রিকেটের সর্ববৃহৎ মঞ্চে যুবরাজে অনুপ্রাণিত ‘সৌম্য ঝলক’ তো দেখা যেতেই পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close