ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৩ জানুয়ারি, ২০১৮

মাইলফলকের সামনে রাজ্জাক

সহজ জয় উত্তরাঞ্চলের

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে জয় পেয়েছে বিসিবি উত্তরাঞ্চল। কাল সিলেট স্টেডিয়ামে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে তারা। চতুর্থ ও শেষ দিনে ৩৩৬ রানে গুটিয়ে যায় মধ্যাঞ্চল। ৬৭ রানের জবাব দিতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় উত্তরাঞ্চল।

বিসিএলের অন্য ম্যাচটার অবশ্য মীমাংসা হয়নি। প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ও ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের ম্যাচটা ড্র হয়েছে। তবে নিষ্প্রাণ ম্যাচের শেষ দিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পাদপ্রদীপে চলে এসেছেন আবদুর রাজ্জাক। বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার সন্নিকটে চলে এসেছেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। মাত্র ১ উইকেট পেলেই দারুণ কীর্তিটা গড়তে পারবেন রাজ্জাক।

৭ উইকেটে ২৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল মধ্যাঞ্চল। শেষ তিন উইকেটে ভালোই লড়াই করেছে তারা। নয়ে নামা মেহরাব হোসেন জুনিয়র ফিরে যান ১৮ রানে। তবে নবম উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন মোশাররফ হোসেন ও মোহাম্মদ শরিফ। ২৪ রান করা শরিফকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। পরে মোশাররফকে ফিরিয়ে ইনিংস গুটিয়ে দেন আরিফুল। মধ্যাঞ্চল অধিনায়ক করেছেন ৬১ রান।

৭১ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার শুভ। আরিফুল ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫০ রানে। প্রথম ইনিংসে এই অলরাউন্ডার নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। রান তাড়ার আনুষ্ঠানিকতা উত্তরাঞ্চল সেরেছে দ্রুতই। ২৩ বলে ২৫ রান করে আউট হন মিজানুর রহমান। আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৩১ রান করে। প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা উত্তরাঞ্চলের জহুরুল হক।

দিনের অন্য ম্যাচটা যে ড্র হবে সেটা অনুমিতই ছিল। কাল বিকেএসপিতে নিশ্চিত ড্রয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকা ম্যাচে শেষ বিকেলে হঠাৎই উত্তেজনার রেণু ছড়ালেন রাজ্জাক। দ্রুত নিলেন ৩ উইকেট। তাতে অবশ্য ম্যাচটার মীমাংসা হয়নি। ম্যাচের শেষ দিনে প্রথম ইনিংসে ৩৯৫ রান তুলে দক্ষিণাঞ্চল। দ্বিতীয় ইনিংসে পূর্বাঞ্চল ৪ উইকেটে ৯৩ রান তোলার পর শেষ হয় ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে পূর্বাঞ্চল করেছিল ৫৪৬ রান।

৫ উইকেটে ৩১৮ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করেছির দক্ষিণাঞ্চল। যথারীতি এদিনও কুয়াশার কারণে ম্যাচ শুরু হয় দেরিতে। বেলা সাড়ে ১১টায় শুরুর পর আল আমিন ও নুরুল হাসান এগিয়ে নেন দলকে। ৮৩ রানের এই জুটি ভাঙে নুরুলের বিদায়ে। ৬৪ বলে ৪৭ রান করে রান আউট হন দক্ষিণাঞ্চল অধিনায়ক। এই জুটি ভাঙার পর দলের ইনিংসও ভেঙে পড়ে দ্রুত। ২৪ রানের মধ্যে হারায় তারা শেষ ৫ উইকেট। এক পাশে ৪৯ রানে অপরাজিত থেকে যান আল আমিন। ৮৬ রানে ৫ উইকেট নেন সোহাগ গাজী। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই অফ স্পিনারের এটি ১৭তম ৫ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংস লিটন দাস ছাড়া সুবিধা করতে পারেনি পূর্বাঞ্চলের বাকি ব্যাটসম্যানেরা। ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেনকে ৫ রানে ফেরান কামরুল ইসলাম রাব্বি। প্রথম ইনিংসের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হককে এবার ১৩ রানে থামান রাজ্জাক। রাজ্জাক পরে আরও দুই উইকেট নেন পরপর দুই বলে। ১৯ রানে ইয়াসির আলির বিদায়ের পর ‘গোল্ডেন ডাক’ আশরাফুল। জাগে রাজ্জাকের ৫০০ উইকেটের আশা। তবে পরের ৫ ওভারে আর উইকেট হারায়নি পূর্বাঞ্চল। ৫১ রানে অপরাজিত থেকে যান লিটন দাস।

৪৯০ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করেছিলেন রাজ্জাক। প্রথম ইনিংসে ৬টির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩টি নিয়ে ম্যাচ শেষ করলেন ৪৯৯ উইকেটে। প্রথম ইনিংসে ২৫৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা মুমিনুল হক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পূর্বাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৫৪৬

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১১০.৫ ওভারে ৩৯৫ (আগের দিন ৩১৮/৫) (আল আমিন ৪৯*, নুরুল ৪৭, জিয়াউর ৭, রাজ্জাক ২, সাকলাইন ০, কামরুল রাব্বি ০; শহিদ ০/৪৩, আবু জায়েদ ০/৯০, সোহাগ ৫/৮৬, নাজমুল অপু ৩/১২৭, মুমিনুল ০/১৬, অলক ১/২৩)।

পূর্বাঞ্চল ২য় ইনিংস : ২৯ ওভারে ৯৩/৪ (ইমতিয়াজ ৫, লিটন ৫১*, মুমিনুল ১৩, ইয়াসির ১৯, আশরাফুল ০, অলক ৩*; কামরুল ১/১৯, রাজ্জাক ৩/৪১, মেহেদি ০/৩)।

ফল : ড্র ম্যাচ সেরা : মুমিনুল হক

মধ্যাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১৮৮

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৪৫৭/৯ (ডি.)

মধ্যাঞ্চল ২য় ইনিংস : ১১৬.৫ ওভারে ৩৩৬ (আগর দিন ২৩৪/৭) (মোশাররফ ৬১, মেহরাব ১৮, শরিফ ২৪, তাসকিন ৪*; শুভাশিস ২/৪৮, ফরহাদ ১/৫৭, আরিফুল ৩/৫০, শুভ ৪/৭১)।

উত্তরাঞ্চল ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৬৮) ১২.১ ওভারে ৭১/০ (শান্ত ৩১*, মিজানুর ২৫, জুনায়েদ ১০*; তানবীর ১/১৫)।

ফল : উত্তরাঞ্চল ৯ উইকেটে জয়ী

ম্যাচ সেরা : জহুরুল হক

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist