নিজস্ব প্রতিবেদক
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট ১৯ ফেব্রুয়ারি
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত এই তফসিল অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন ইভিএম সংক্রান্ত কারণ ও ভোটের তফসিল ঘোষণা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এসব কথা জানান। এর আগে মঙ্গলবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করার পর বুধবার বেলা ১১টায় সিইসির নেতৃত্বাধীন কমিশন সভায় বসে। বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন তিনি, যিনি এ নির্বাচনের ‘নির্বাচনী কর্তা’। নির্বাচনী কর্তার কার্যালয়ের (প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে নির্ধারিত দিনে অফিস চলাকালে) মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। প্রার্থীর সংখ্যা একজনের বেশি না হলে তাকেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে বিধিমালা অনুযায়ী ভোট হবে।
২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। ফলে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। স্বাধীনতার পর থেকে ২০ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্টপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দুই মেয়াদে রয়েছেন। সেই হিসাবে নতুন রাষ্ট্রপতি এই পদে অষ্টদশ ব্যক্তি। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবার সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। সিইসি জানান, একাধিক প্রার্থী হলে ১৯ ফেব্রুয়ারি সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা।
ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে। বিএনপির সাত সদস্য পদত্যাগ করায় (ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং একটি সংরক্ষিত নারী আসন) বর্তমানে ৩৪৩ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন যাদের মধ্যে ৪৯ জন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ৬ আসনের উপনির্বাচন রয়েছে, পরে নারী আসনের ভোট হবে একটিতে।
"