নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে আরো ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা হলো ১১ হাজার ৭০৫। আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৬৫ জনের। গত রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জনের এবং এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জনের মৃত্যু হয়। গত বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৮৮ জন কোভিড রোগীর। গত ২৮ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৭৭ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭৮

জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ২৬ এপ্রিল সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৯৭ জনের। গত ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ১০১ জনের। এর আগে ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত টানা চার দিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ১০০-এর ওপরে ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯১৪ জনের শরীরে। এ নিয়ে দেশে শনাক্ত হওয়া কোভিড রোগীর সংখ্যা হলো ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬। আগের ২৪ ঘণ্টায় কোভিড শনাক্ত হয় ১ হাজার ৭৩৯ জনের। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত রোগী কিছুটা বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ২৩ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৮৮ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৯৮ জনের। গত ২১ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মারা যান ৯৫ জন। গত ২০ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৯১ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এটিই এখন পর্যন্ত দেশে এক দিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। গত ১৮ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ১০২ জনের। এর আগে পরপর দুই দিন ১০১ জন করে মারা গিয়েছিলেন।

গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪২০টি ল্যাবে ২১ হাজার ৯৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গেছে ১ হাজার ৯১৪ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ ছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২১ হাজার ৯১৪টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৬১ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৬ এবং নারী ২৫ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনই ষাটোর্ধ্ব বয়সি। অন্যদের মধ্যে একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে, তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং বাকি ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ২৮ জন। এ ছাড়া আছেন চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ জন; রাজশাহী বিভাগে সাতজন; রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে দুজন করে এবং খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে। ৫৯ জনেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। বাকি দুজনের বাসায় মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৩ হাজার ৭৮০ জন কোভিড রোগী সুস্থ হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৩২। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৪টি। দেশে মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

মার্চের শুরু থেকেই দেশে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও মাসের শেষ দিক থেকে তা বাড়তে থাকে দ্রুতগতিতে। গত ৭ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড শনাক্ত হয় ৭ হাজার ৬২৬ জনের। দেশে এটিই এখন পর্যন্ত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগেও পরপর তিন দিন দৈনিক সাত হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়। গত ৬ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ২১৩ জনের দেহে। গত ৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৭৫ জনের। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ৮৭ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪২০টি ল্যাবে ১৯ হাজার ৪৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ১ হাজার ৭৩৯ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। গত রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪২০টি ল্যাবে ১৪ হাজার ১৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ১ হাজার ৩৫৯ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ১১৭টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ১ হাজার ৪৫২ জনের। শনাক্ত হার ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া যায় ২ হাজার ১৭৭ জনের। শনাক্ত হার ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৯২৮টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ২ হাজার ৩৪১ জনের। শনাক্ত হার ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত ২৮ এপ্রিল বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ২০৬টি নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড পাওয়া গিয়েছিল ২ হাজার ৯৫৫ জনের। শনাক্ত হার ছিল ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২৬ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২৫ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ। গত ২৩ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৪ শতাংশ। গত ২২ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত ২০ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গত ১৮ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গত ১৭ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ১৬ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত ১৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ২১ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত ১৩ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। ১২ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ১১ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ শনাক্ত হার ছিল ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত ৯ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৮ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৭ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল ২২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

দেশে কোভিড শনাক্ত হার ২০ শতাংশের বেশি হয়েছিল গত বছরের মে মাসের শেষ দিকে। সেখান থেকে কমতে কমতে এ হার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। গত মাসের শেষ দিক থেকে আবার বাড়ছে শনাক্ত হার।

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিডে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। গত বছরের ৩০ জুন সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল।

"