নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯

জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

দেশ থেকে কুষ্ঠরোগ নির্মূল করা হবে

২০৩০ সালের আগেই দেশ থেকে কুষ্ঠরোগ নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা প্রদানে কুষ্ঠরোগীদের জন্য ওষুধ তৈরি এবং বিনামূল্যে বিতরণ করার জন্য স্থানীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘২০৩০ সালের মধ্যে শূন্য কুষ্ঠ উদ্যোগ’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন ২০১৯ উদ্বোধন কালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে অনেক ওষুধ কোম্পানি রয়েছে যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধ রফতানি করে এবং তাদের ওষুধের মান খুবই ভালো। তাই আমি তাদের বিশেষায়িত ওষুধ তৈরি করার জন্য অনুরোধ জানাতে চাই যা কুষ্ঠরোগীদের জন্য দরকার। এসব ওষুধ রোগীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করার ব্যবস্থা করুন যা দ্রুত আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের আগেই কুষ্ঠমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় কুষ্ঠ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, এ লক্ষ্যে আমরা যদি আন্তরিকভাবে কাজ করি তাহলে আমরা লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের অনেক আগেই কুষ্ঠমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব।

কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সমাজের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কুষ্ঠরোগীদের সঙ্গে আচরণ করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠ আক্রান্ত লোকদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি এবং নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি লোকজনকে বলতে চাই যে, তারা আমাদের সমাজেরই অংশ। তাই তাদের দূরে ঠেলে দেয়া সঠিক নয়। কোনো ব্যক্তির দেহে কুষ্ঠরোগ শনাক্ত হলে আপনাদের সহানুভূতির সঙ্গে তার সঙ্গে আচরণ করতে হবে এবং তিনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন সে লক্ষ্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এটি খুবই জরুরি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ডব্লিউওএইচও গুডউইল অ্যাম্বাসেডর ইওহেই সাসাকাওয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক পর্যায়ে কুষ্ঠরোগীদের দেহে রোগটি শনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ প্রদান করে বলেন, কুষ্ঠরোগের কারণে প্রতিবন্ধী লোকদের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মসংস্থানের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অবশ্যই বাদ দেয়া যাবে না বরং প্রতিবন্ধী লোকের জন্য একটি অনুকূল কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। কুষ্ঠমুক্ত দেশ গঠনে তার সরকারের দীর্ঘ পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই রোগ নির্মূলে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল।

তিনি বলেন, ‘তখন সেসব পদক্ষেপের সুফল হিসেবে ১৯৯৮ সালে দেশে কুষ্ঠরোগীর সংখ্যা প্রতি ১০ হাজারে একজনে নামাতে সক্ষম হয়েছিলাম। এর মানে আমরা ২০০০ সালের পরিবর্তে ১৯৯৮ সালের মধ্যেই এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিলাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, উত্তরবঙ্গ ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় কুষ্ঠরোগীর সংখ্যা বেশি। এই রোগের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আমাদের ওই এলাকাগুলো বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এবং কুষ্ঠরোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি আমরা এটা করতে পারি তবে ২০৩০ সালের মধ্যেই আমরা একটি কুষ্ঠমুক্ত দেশ গড়তে পারব ইনশাআল্লাহ।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close