reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন হোক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় দেশ আজ উন্নয়নের চূড়ান্ত শিখরে। রূপকল্প ২০২১-এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চেয়েছেন। ফলে এই প্রথম দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে এক ধরনের জন-আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। রূপকল্প ২০২১-এর পর রূপকল্প ২০৪১-এ সমৃদ্ধিশালী দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি দৃঢ়প্রত্যয়ী। উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েই প্রধামন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য নিরসনে কাজ করছে।

বলা সংগত, বাংলাদেশের রূপান্তরের পেছনে সবচেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি ও দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকার কারণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। স্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে গত দশকে চীনের পরই বাংলাদেশের গড় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি সবচেয়ে বেশি ছিল। তা ছাড়া সরকার ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নতির জন্য অবকাঠামোভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত ব্লুমবার্গ সংবাদ সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় তার সময়োচিত সংস্কার পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য। এমনকি এই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্যই চতুর্থবারের মতো তিনি ক্ষমতায় এসেছেন, যা জাতির জন্য আশীর্বাদই বলা যায়। এবার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন, দুর্নীতিপ্রতিরোধ, যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সচিব সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সচিবদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী টানা সাড়ে ৪ ঘণ্টা কথা বলেছেন। সভায় সব সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় নির্বাচনে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সচিব এবং জনপ্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা সুসংহত হয়েছে। সভায় প্রথমে নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আসন্ন রমজানের প্রস্তুতি নিয়ে সচিবদের তিনি অবহিত করেন। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, কৃষি উৎপাদন ও সার ব্যবস্থাপনা, কর্মমুখী শিক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম ও কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও জ্বালানি নিরাপত্তা, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক খাতের দক্ষতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়। মুদ্রাস্ফীতি, বিনিয়োগ, রাজস্ব আদায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। এ ছাড়া তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে নজরদারি করতে বলেছেন। নজরদারি করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্রের কথাও তিনি বলেছেন। অনেক সময় দ্রব্যমূল্যের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ আসে। নিউজ আসে। এ ক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে খুবই শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। বিদ্যুৎ-জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে সেচ মৌসুমে সতর্কতার সঙ্গে তা ব্যবহার করতে বলেছেন। কোনোভাবে যেন সেচ মৌসুম বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটির খেয়াল রাখতে বলেছেন। সেচের ক্ষেত্রে সোলার এনার্জি ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন।

বলাবাহুল্য, কৃষির আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো সুবিধাদির কারণে মানুষ এখন ঝুঁকি সহনশীল ও বিনিয়োগপ্রবণ। বহুমুখী কৃষি কর্মকাণ্ড প্রসারিত হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক গতিশীলতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের উন্নয়নের নিয়ামক ভূমিকা পালন করছে। রাজনৈতিক কারণে কোনো বড় সামাজিক অস্থিরতা তৈরি না হলে উন্নয়নের এ গতি অব্যাহত থাকবে অবিশ্বাস্য গতিতে। আমরা আশা করি, রাজনৈতিক স্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে সব খাতে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close