reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটুক

অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট গ্রহণ করা হয়। এবার সবচেয়ে বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি-জামায়াতের বিরোধিতা সত্ত্বেও এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জনগণের অংশগ্রহণে ও ভোটারদের আগমনে নির্বাচনের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। এ ছাড়া ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে এসে নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, সেজন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণের কাজে ৮ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত ছিলেন। তাদের পাশাপাশি ১ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী স্ট্যান্ডবাই রাখা হয় এবং ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারক মাঠে ছিলেন। যাতে যেকোনো অপরাধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ গ্রহণ করতে পারেন।

নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনায় ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ভোটের সর্বশেষ আপডেট জানার জন্য স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি অ্যাপস চালু করা হয়েছে। তার মাধ্যমে ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতির সঠিক তথ্য সম্পর্কে জনগণ যেকোনো জায়গা থেকে সহজে জানতে পারেন। একটি বাদে বাকি ২৯৯ সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৯৭০ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ইসিতে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এসব দলের প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১ হাজার ৫৩৪ প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ৪৩৬ জন। বলাবাহুল্য, একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশায় ছিল পুরো জাতি। স্থানীয় বা জাতীয় যেকোনো নির্বাচনই হোক, সেটা শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে নেওয়া নির্বাচন কমিশনের মৌলিক এবং অপরিহার্য দায়িত্ব। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন ঠেকাতে নানা রকম নৈরাজ্য চালিয়েছে। বাস, ট্রেনে অগ্নিসন্ত্রাসে সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে আগুনে বেনাপোল এক্সপ্রেসের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আমরা অতীতেও দেখেছি। অবরোধের নামে মানুষ হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি-জামায়াতের হিংস্র মনোবৃত্তির পুনঃপ্রকাশ এবারও ঘটিয়েছে। তবে মনে রাখা উচিত, এভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের কৌশল বা উপাদান হতে পারে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি জোটের ভয়াবহ সন্ত্রাসের রাজত্ব কেউ ভোলেনি। তখন শত শত যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পেট্রল বোমার আঘাতে দগ্ধ মানুষের আহাজারিতে হাসপাতালগুলোর বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। পবিত্র উপাসনালয় মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায়ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি লাখ লাখ গাছও। নির্বাচনের দিন প্রিসাইডিং অফিসারসহ হত্যা করা হয় ২৬ জন নিরীহ মানুষকে। সারা দেশে ৫৮২টি ভোটকেন্দ্রে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এবারের নির্বাচন সামনে রেখেও একই খেলায় তারা মেতে ওঠে।

দেশে গণতন্ত্রের চর্চা ও জবাবদিহিমূলক শাসন কায়েমে নির্বাচনের ভূমিকা অপরিসীম। এ ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন শেষে গঠিত হবে নতুন সরকার। দেশে যাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ থাকে এবং সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close