গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির

  ০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

মুক্তমত

নতুন বছরে তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা

তরুণদের পাশে থেকে দেশকে সুন্দর এবং সমৃদ্ধিশালী করে গড়ে তুলতে হবে আমাদের। একটি বছর শেষ হওয়া মানে আরেকটি নতুন বছর পাওয়া। কিছু পুরাতন হয়ে গেলে নতুন কিছু পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এটাই পৃথিবীর নিয়ম। ২০২৩ শেষ, আমরা ২০২৪ সালে পদার্পণ করেছি। নতুন বছর মানেই নতুন কিছু। প্রত্যাশার পাল্লাটাও একটু ভারী হওয়া চাই। চাওয়াটাও একটু বেশি হবে। এটা সাধারণ বিষয়। আমরা যখন নতুন কিছু নিতে যাই, তখন সব সময় ভালোটাই চাই। আমরা সব সময় পুরাতন জিনিসটার চেয়ে আরো আপডেট এবং ভালো জিনিসটাই খুঁজি এবং সেটাই গ্রহণ করি। ঠিক সেভাবে ২০২৩ সালের সব ভুল-ভ্রান্তি ভুলে গিয়ে আমরা পেতে চাই আরো সুন্দর এবং সাজানো-গোছানো একটি বছর।

২০২৪ সালের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বছরেই নতুনভাবে সরকার গঠন হবে। আমরা জানি, পরিকল্পনা ছাড়া কিছুই সঠিকভাবে সফল করা যায় না। আর এই পরিকল্পনায় সর্বপ্রথমেই থাকতে হবে তরুণদের চাওয়া। নতুন বছরটা যেন তরুণদের কথা মাথায় রেখে কাজ শুরু করে সরকার, সেটাই নতুন প্রজন্মের চাওয়া এবং বর্তমান তরুণদের প্রত্যাশা। তরুণদের কথা মাথায় রেখে মানি তাদের নিয়ে একসঙ্গে প্রিয় মাতৃভৃমি সোনার বাংলাকে সাজাতে, বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়ন করতে হলে অবশ্যই তরুণদের সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে। সুযোগ দিতে হবে তরুণদের। তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। বেকার তরুণ যুবকদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। নতুন বছরটা হোক তরুণদের জন্য একটি আশীর্বাদের বছর। সোনার বাংলা গড়ার জন্য তরুণদের এই প্রত্যাশা পূরণ করাটা অত্যন্ত জরুরি। আমি বিশ্বাস করি, এবারের নতুন বছরটি বাংলাদেশের জন্য এবং নতুন প্রজন্মের জন্য এক নতুন আশার আলো হবে। নতুন বছরে নতুনভাবে বাংলার মানুষ পাবে বাংলাদেশের সরকার। এবার যেন সরকার আরো বেশি তরুণ নির্ভর হয়, আরো বেশি তরুণদের জন্য কাজ করে সেই প্রত্যাশা রইল। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম কিন্তু কথায় নয়, কাজেও বিশ্বাস করে। তাদের আশ্বাস নয়, বিশ্বাস দিতে হবে। তরুণদের সঙ্গে যদি ছিনিমিনি খেলা হয়, তবে সেটা দেশের জন্য সুখকর হবে না। মনে রাখতে হবে, তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের সুযোগ না দেওয়া মানে দেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলা গড়ার কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তার তরুণ বয়সে দেখিয়েছেন তরুণরা কতটা করতে পারে দেশের জন্য। আমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়লেই জানতে পারব তরুণ বঙ্গবন্ধু কতটা সফল ছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বর্তমান তরুণ প্রজন্মও সফল হতে চায়। আর সরকার যিনিই হোক তরুণদের সেই সফলতা এনে দিতে হবে, এটাই তরুণদের চাওয়া। তরুণদের পাশে থেকে তাদের সুযোগ দিয়ে দেশকে আরো সমৃদ্ধ এবং সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে আমাদের।

এ ছাড়া আমাদের দেশে আজ খেলার মাঠের বড় সংকট। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ খেলতে পছন্দ করে। অবসর সময়ে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে খেলাধুলা করা। কিন্তু এই খেলাধুলা করার জন্য কোনো মাঠ এখন পাওয়া যায় না। সব মাঠে আজ দালানে পরিপূর্ণ। নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা- এই সমস্যা সমাধান করে প্রতিটি এলাকায় একটি করে উন্মুক্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, মাদকের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে চাইলে খেলাধুলার বিকল্প নেই। আমরা যদি আমাদের আশপাশে লক্ষ করি, তাহলে দেখতে পাব তারাই ভালো আছে, যারা খেলাধুলা করে। আমাদের দেশে বর্তমানে মাদকের যে বিচরণ বা ছড়াছড়ি তা থেকে তরুণ সমাজকে বাঁচাতে হবে। প্রতিটি স্থানেই এখন মাদক পাওয়া যায়। ইয়াবা থেকে শুরু করে গাঁজা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এখন তরুণদের হাতের নাগালে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তাদের নাগাল খুঁজে পাচ্ছে না। সমাজে ভালো মানুষের মুখোশ পরে আড়ালে মাদকের ব্যবসা করাটাই এখন অনেকের আদর্শ, যা আমরা খালি চোখে দেখি না অনেকে। তবে যারা দেখি তারাও বলতে পারি না ভয়ে। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো দক্ষ ও আন্তরিক হওয়া উচিত। তা না হলে হাজারো মাদকবিরোধী অভিযান করলেও মাদকের আগ্রাসন কখনো থামবে না। আড়ালে মাদক ব্যবসা চলতেই থাকবে। কারণ মাদক ব্যবসায়ীরা তখন মনে করবে তাদের ধরার ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও নেই। তাই তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হলে মাদকের ছড়াছড়ি বন্ধ করতে হবে। নতুন বছরে বাংলার মানুষ নতুন মেয়াদে সরকার পাবে। সরকার প্রধান যিনিই হন না কেন- তরুণ সমাজের প্রত্যাশাগুলো মাথায় রেখে কাজ শুরু করার অনুরোধ রইল। পরিশেষে বলতে চাই, নতুন প্রজন্মের চাওয়া এবং প্রত্যাশাগুলো যেন প্রাপ্তি দিয়ে পূরণ হয়।

লেখক : ধর্ম ও সমাজসচেতন লেখক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপক ও চেয়ারম্যান, গাউছিয়া ইসলামিক মিশন, কুমিল্লা

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close