অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

  ১৫ মার্চ, ২০২৩

দৃষ্টিপাত

বিএসএমএমইউর চতুর্থ সমাবর্তনের অঙ্গীকার

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন আর ত্যাগের অর্জন আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। আর তারই সুযোগ্য কন্যা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিগত ২৫ বছর পথপরিক্রমায় আজ ১৭ কোটি মানুষের পরম ভরসার আশ্রয়স্থল আমার এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধুর নাম বিজড়িত এই মহান বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য হিসেবে আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত গৌরবান্বিত মনে করছি। আর আজকের এই গৌরবের সবচেয়ে বড় উপলক্ষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর অর্জন করা সম্মানিত চিকিৎসকদের জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার সর্বোচ্চ সংস্থাই নয়, এটি আমাদের দেশের স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণা, শিক্ষা আর প্রশিক্ষণেরও সর্বোৎকৃষ্ট বিদ্যাপীঠ। প্রতিদিন যেমন আমরা হাজারো রোগীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করি, তেমনি প্রতি বছর শত শত মৌলিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এ রকম বিদ্যাপীঠে লেখাপড়ার সুযোগ পাওয়া স্বপ্নের, আর লেখাপড়া শেষ করে ডিগ্রি নেওয়া স্বপ্নপূরণের। আপনাদের সেই স্বপ্নপূরণের মহাক্ষণকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়াশে আমাদের আন্তরিক আয়োজন চতুর্থ সমাবর্তন।

চিকিৎসা শিক্ষায় স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়ন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার প্রথম তিন তারকা শাহবাগ হোটেলের জায়গায় ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমএন্ডআর) প্রতিষ্ঠিত হয়। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা ও গবেষণার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও এই প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি প্রদানের ক্ষমতা ছিল না। ডিগ্রি প্রদান করত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আইপিজিএমএন্ডআর কার্যক্রমসহ অনেকগুলো চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের এমবিবিএস ডিগ্রি প্রদান করত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

জনগণের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং দেশের চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে তৎকালীন আইপিজিএমএন্ডআরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত করার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম স্বতন্ত্র পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজকে এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গায় পৌঁছায়।

জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম পাবলিক মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসক সমাজ আন্তর্জাতিক মান অর্জন করে দেশের আপামর জনসাধারণের সুচিকিৎসায় নিয়োজিত হবেন এ আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর শুধু হীন রাজনৈতিক সংকীর্ণতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে আবার আইপিজিএমআর করার উদ্যোগ নেয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন করেছিলাম তাদের বিরুদ্ধে নানান মামলা, হামলা করেছিল তৎকালীন সরকারের লেজুড়ভিত্তিক চিকিৎসক সংগঠন ড্যাব ও কর্মচারী গোষ্ঠী। এহেন ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ দেশের সব পেশাজীবী ও আপামর জনসাধারণ তীব্র ক্ষোভ ও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তীব্র আন্দোলনের ফলে বিএনপি-জামায়াত সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবু ক্ষোভের বশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলক থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলে সংক্ষেপে বিএসএমএমইউ লিখে পরিচিতি দেয়। এমনকি তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা থেকে গাজীপুর, টুঙ্গিপাড়া বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার হীন উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ দেশের জনসাধারণের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আবারও ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সেলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বারডেমসংলগ্ন বেতার ভবনের জমি ও হাসপাতালের উত্তর পাশের ১২ বিঘা জমির স্থায়ী বন্দোবস্ত করে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে ৫২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহায়তা ও দিকনির্দেশনায় খুব দ্রুত নতুন কেবিন ব্লক সম্প্রসারণ, অনকোলজি ভবন, নতুন বহির্বিভাগ, আধুনিক আইসিইউ, ওটি কমপ্লেক্স, মেডিকেল কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান, চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোটা প্রবর্তনসহ নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেল গঠন করা হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা অল্প খরচে করা এবং আলাদা কেবিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, জাতির পিতার নামে এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা সেবা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। স্পেনের সিমাগো এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস এ দুটো বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা মানসম্মত চিকিৎসা এবং গবেষণার জন্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ পঞ্চম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ার মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানের মর্যাদা দিয়েছে।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০৫টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে, অন্যান্য ৪১টি মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর মধ্যে ৬২টি রেসিডেন্সি কোর্স রয়েছে। চালু হয়েছে এমএসসি নার্সিং কোর্স। বাংলাদেশের ছাত্রদের বাইরেও ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সোমালিয়া, কানাডা, ইয়েমেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান এবং অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশের প্রায় ৩৫০ বিদেশি ছাত্র বিভিন্ন কোর্সে লেখাপড়া করছেন।

প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ৮০০০ রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে সন্তুষ্টি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে এখন বিভিন্ন ইউনিটসহ ৫৭টি পূর্ণাঙ্গ বিভাগ। আরো সুশৃঙ্খল এবং ডিজিটাল করা হয়েছে আর্থিক ব্যবস্থাপনা।

আমাদের হাসপাতালে এখন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, সরকারের সর্বোচ্চপর্যায়ে কর্মকর্তা, সমাজের বিভিন্নপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এখানে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের সব মানুষের কাছে পরিগণিত হয়েছে চিকিৎসার নির্ভরযোগ্য আস্থাস্থল হিসেবে।

রোগীদের আরো উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা এরই মধ্যে চালু করেছি ভিট্রিও রেটিনা, গ্লকোমা, কণিয়া, অকুলোপ্লাস্টি, ক্যাটারেক্ট ও রিফ্রেকটিভ সাজারি, অথোস্কোপিক ও অথোপ্লাস্টি, হ্যান্ড অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সাজারি, শিশু এন্ডোক্রাইনোলজি, জেনারেল রিউম্যাটোলজি, ইমিউনো রিউম্যাটোলজি, ইলেক্ট্রোকাডিওলজি, ইকোকাডিওগ্রাফি, এডাল্ট কনজিনিটাল হাট ডিজিজসহ ১৫টি ডিভিশন খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সার্জিক্যাল অনকোলজি, কলোরেক্টাল সার্জারি, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড প্যানক্রিয়েটিক সার্জারি, গাইনোকলোজিক্যাল অনকোলজি, রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি, ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন এবং ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ নামে আরো ৭টি বিভাগ খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনুমোদিত হয়েছে নতুন শিশু অনুষদ। মেডিকেল শিক্ষাব্যবস্থায় গবেষণাকে জোরদার করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কেন্দ্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগে রোগীর ল্যাবরেটরি রিপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা এবং একুশে গ্রেনেড হামলায় আহত রোগীদের জন্য বিশেষ চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় করোনা মহামারিতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবাসহ ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। এই চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমে এই বিশ্ববিদ্যালয় সংযুক্ত হাসপাতাল গুরুত্বপূণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ ও কোরিয়া সরকারের যৌথ অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। ফলে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে কম খরচে উন্নত মানের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া দেশে প্রথমবারের মতো ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। লিভারসহ অন্যান্য অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট কার্যক্রমও সমন্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র। বেসরকারি রেসিডেন্টদের জন্য সরকার থেকে মাসিক ২০,০০০ টাকা সম্মানীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে সব ছাত্রছাত্রীর জন্য বিশেষ বাস সার্ভিস। শিক্ষা, সেবাসহ সব পর্যায়ের মান উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি)। সব শিক্ষক, কনসালট্যান্ট, কর্মকর্তা, নার্সদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা।

বিশ্ববিদ্যালয় জার্নাল এখন নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে দেশের প্রথম সারির জার্নাল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। গত তিন বছরে ১৫০০টি গবেষণা কর্মসম্পন্ন হয়েছে। প্রতি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংবাদসহ নিউজ লেটার নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর প্রকাশনা, সব জাতীয় আন্তর্জাতিক দিবস সমূহকে সঠিকভাবে উদযাপন করা হয়েছে। প্রতি মাসে সায়েন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণে শিক্ষক, চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। প্রতি বছর ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে।

গত তিন বছরে ২৪০ জন শিক্ষক এবং ৯১০ জন ছাত্রকে গবেষণা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্বারক চুক্তি। আগামী পঞ্চাশ বছরের পরিকল্পনা বিবেচনায় রেখে একটি মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে চলছে সব উন্নয়ন কার্যক্রম। অচিরেই যুক্ত হতে চলেছে ইমার্জেন্সি সার্ভিস, ওয়ান পয়েন্ট চেকআপ সেন্টার, ডে-কেয়ার সেন্টার, বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন, ই-টিকেটিং, সর্বক্ষেত্রে স্মার্ট পদ্ধতি।

অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা এখানে কার্যক্রম পরিচালনা করি। তার পরও সব শিক্ষক, ছাত্র, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম, সেবা কার্যক্রম, গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে সফলতা নিয়ে। প্রতিদিন এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ-দেশি-বিদেশি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিতে। আমাদের ছাত্র এবং তরুণ চিকিৎসকরা এ সুযোগ গ্রহণ করে নিজেদের সমৃদ্ধ করছে নতুন নতুন জ্ঞান/অভিজ্ঞতা নিয়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সোসাইটির সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চার প্রাণকেন্দ্র।

ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার তা করব। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের বুকে একটা রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব এই হলো চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভিসি হিসেবে আমার অঙ্গীকার। উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান, শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে এই প্রত্যাশা সবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতায় এবং সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনায় সফল হবই, ইনশাল্লাহ।

লেখক : উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close