reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ জুন, ২০১৮

মার্কিন শিবিরে বন্দি শিশুরা

কেমন আছো তোমরা! এ প্রশ্নের জবাবও আমাদের আজ অজানা নয়। আমরাও জেনে গেছি, আড়াই হাজার শিশু আজ মার্কিন শিবিরে বন্দি। বাবাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এসব শিশু তা জানে না। জানে না মা-বাবার সঙ্গে তাদের আর কোনো দিন দেখা হবে কি না। সব হারিয়ে তারা এখন কার্যত একা-একাই এক বিশাল নিঃসঙ্গতার মধ্যে বন্দি হয়ে পড়ে আছে। নির্দোষ, নিষ্পাপ এই শিশুদের ওপর নির্দয় আচরণ কেন-এর কোনো সদুত্তর নেই তথাকথিত এই সভ্য পৃথিবীর কাছে। মেক্সিকোসহ মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকে সীমান্ত পেরিয়ে মা-বাবার হাত ধরে আশ্রয় পেতে চেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু মাঝপথেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পেতে রাখা গিলোটিনে (কঠোর অভিবাসননীতি) দ্বিখ-িত হলো মানবতা। আড়াই হাজার শিশুর নান্দনিক অভিব্যক্তিকে ব্যবচ্ছেদ করা হলো এক নারকীয় তা-বে। যে তা-বের নেতৃত্ব দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসননীতির ফাঁসে আটকে যায় শিশুদের পরিবার। পরিবার পরিজন থেকে শিশুদের ব্যবচ্ছেদ করে তাদের মা-বাবাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় মার্কিন কাস্টমস দফতর। সেই থেকেই শিবিরে অবহেলায়, অনাদরে অনাথ শিশুর মতো দিন কাটাচ্ছে এই শিশুরা। বিশ্বে যদি মানবতার অস্তিত্ব এখনো থেকে থাকে, এহেন অনৈতিক আচরণের জবাব একদিন মার্কিন প্রেসিডেন্টকেই দিতে হবে। যার প্রতিফলন ইতোমধ্যেই প্রতিফলিত হতে শুরু করেছে।

পাপ বেশিদিন চাপা থাকে না। সময়ের পারিপার্শিকতার মধ্য দিয়ে তা একসময় বেরিয়ে আসতে বাধ্য। ট্রাম্পের এই অনৈতিক আচরণও বেশিদিন চাপা থাকেনি। এই আচরণের বিরুদ্ধে তর্জনী উঁচিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক নেতাও। শিশুদের ওপর এহেন অনৈতিক আচরণ মানবাধিকারকে কতটা লঙ্ঘন করেছে, তার পরিমাপ না করেই বলা যায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যা করছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ নাগরিকের কাম্য নয়। তারাও প্রেসিডেন্টের এহেন কর্মকান্ডের সঙ্গে একমত নন। এই অনৈতিক আচরণের রেশ কাটতে না কাটতেই জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘের বিরুদ্ধে ‘নোংরা রাজনৈতিক পক্ষপাত’ ও ‘চরম ইসরায়েলবিরোধী’র অভিযোগ উত্থাপন করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও কাউন্সিলকে মানবাধিকারের দুর্বল রক্ষক বলে উল্লেখ করেছেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, সংস্থাটি ‘কপট ও স্বার্থপরায়ণ’। প্রত্যুত্তরে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাব্যঞ্জক’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, খবরটি বিস্ময়কর নয়। এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, বিশ্বশান্তির জন্য ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র হলো প্রথম সেই রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রটি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিল।

এখন প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কী পৃথিবী থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি নির্জন দ্বীপে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করার পথে এগিয়ে চলেছেন! আড়াই হাজার শিশুকে নিঃসঙ্গতার অতল গহ্বরে পাঠানোর প্রতিক্রিয়ায় বলতে হয়, নিউটনের তৃতীয় সূত্র আবার নতুন করে প্রমাণ করবে ‘ওহ ঊাবৎু অপঃরড়হ ঞযবৎব ওং অহ ঊয়ঁধষ অহফ ঙঢ়ঢ়ড়ংরঃব জবধপঃরড়হ’.

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist