আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জি-৭ বৈঠকের প্রথম দিনেই ‘তোপের মুখে’ ট্রাম্প
কানাডায় শুরু হওয়া জি-৭ বৈঠকের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের অবস্থানগত পার্থক্য বেশ ফুটে উঠেছে। ট্রাম্প জি-৭-এর সদস্য হিসেবে রাশিয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রস্তাব তোলেন কিন্তু ইউরোপীয় দেশগুলোর পাশাপাশি কানাডাও ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ‘না’ বলে দেয়। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কের বিষয়ে হওয়া আলোচনায়ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করে বাকি সদস্যরা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপ করা শুল্কের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর জি-৭ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। আর এখন ট্রাম্প চাইছেন তাকে ফিরিয়ে আনতে। ট্রাম্প বলছিলেন, আপনাদের ভালো লাগুক আর না লাগুক, এমনকি বিষয়টি যদি রাজনৈতিক দিক থেকে ভুল হয়েও থাকে তাহলেও বিশ্ব পরিচালনার স্বার্থে এখন যেটা জি-৭ রাশিয়াকে ফিরিয়ে এনে সেটাকে আবার আবার জি-৮ হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। কিন্তু সম্মেলনের সভায় জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল জানিয়ে দেন, ইউক্রেনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হলে জি-৭ জোটে রাশিয়াকে ফিরিয়ে আনার পক্ষপাতী নন তারা। কানাডাসহ অন্য দেশগুলোও জার্মানির কথায় সমর্থন দেয়।
ট্রাম্প কেন হঠাৎ রাশিয়াকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন সে বিষয়ে গার্ডিয়ান লিখেছে, ট্রাম্প ভালো করেই জানতেন ইউরোপীয় নেতারা রাশিয়াকে ফেরত আনার বিষয়ে রাজি হবেন না। আর রাশিয়াও জানিয়ে দিয়েছে তারা জি-৭ টাইপের কোনো সংগঠনে যেতে ইচ্ছুক নয়, অন্য কোনো সংগঠনে যেতে আগ্রহী তারা। এ রকম পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের রাশিয়াপ্রীতিকে নিছকই দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাবার চাল হিসেবে দেখছে গার্ডিয়ান। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপ করা শুল্কের বিষয়েও সদস্যরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ বলেছেন। অন্যদিকে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শুল্ক, জলবায়ু পরিবর্তন ও ইরান বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান বিপজ্জনক। তার ভাষ্য, যা আমাকে সবচেয়ে বেশি ভাবিয়ে তুলেছে তা হলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়েছে। আর তা সাধারণত যাদের সন্দেহ করা হয় তাদের মাধ্যমে নয় বরং এ ব্যবস্থার মূল আর্কিটেক্ট ও গ্যারান্টার যুক্তরাষ্ট্রের কারণে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প তাকে বলেছেন, শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটু পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিল, তবে এখন তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথা ভাবছে। জবাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন, তারা সবাই একটি সমঝোতাই চাইছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্মেলন শেষের দুদিন আগেই কানাডা ত্যাগ করবেন। ১২ জুন সিঙ্গাপুরে তার উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে এক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা।
"