আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দেশে ফিরে আবেগে ভাসলেন মালালা
তখন সে ১২ বছরের কিশোরী। পাক তালেবান জঙ্গিরা সরাসরি মাথায় গুলি করেছিল। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশ ছাড়তে হয়েছিল। তারপর থেকে আর নিজের দেশে ফেরা হয়নি।
২০১২ থেকে ব্রিটেনেই থাকতে শুরু করে মালালা ইউসুফজাইয়ের পরিবার। দেশের জন্য, পরিচিতদের জন্য মন কেঁদেছে এতদিন। অবশেষে অপেক্ষার অবসান হলো। বাবা আর পরিবারের বাকিদের সঙ্গে পাকিস্তানে ফিরলেন নোবেলজয়ী মালালা। দেশের মাটিতে পা রেখে কেঁদেও ফেললেন। বললেন, ‘ভাবিনি পাঁচ বছর ধরে দেখা স্বপ্নটা সত্যি হবে।’
গত বৃহস্পতিবার সকালেই ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে নামেন মালালা ও তার পরিবার। নিরাপত্তারক্ষীরা ঘিরে রেখেছিলেন তাকে। সেখান থেকে গাড়িতে উঠতে দেখা যায় তাকে। তারপর পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসির সঙ্গে দেখা করেন মালালা। মালালাকে খকন বলেন, ‘ঘরে স্বাগত।’ হালকা কমলা কামিজ আর ঘিয়ে রঙের সালোয়ার পরা মালালার মাথায় ছিল রঙিন ওড়না। বেশ খানিকক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারপর দেশের জাতীয় টিভি চ্যানেলে নারী শিক্ষার প্রসার নিয়ে বক্তৃতা দেন।
পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সচরাচর কাঁদি না। মাত্র ২০ বছর বয়স তো, এর মধ্যেই জীবনের অনেক ওঠা-পড়া দেখে ফেলেছি।’ নারী শিক্ষা নিয়ে প্রচারের জন্যই তালেবানের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল মালালাকে। সোয়াটে ছিল তার বাড়ি। নোবেল পুরস্কারের পাওয়া অর্থ দিয়ে সোয়াটের কাছে সাংলায় একটি মেয়েদের স্কুলও গড়ছেন তিনি।
এক আত্মীয় জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিনই দেশে ফিরতে চাইছিলেন মালালা। বাড়ি যেতে চাইছিলেন। আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। গত সপ্তাহে ছিল পাকিস্তান দিবস। অক্সফোর্ডের এই ছাত্রী টুইটারে সেদিন লেখেন, ‘এই দিনটায় বাড়ির ছাদে ক্রিকেট খেলা আর স্কুলে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কথা মনে পড়ে খুব।’ তবে আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সোয়াটে যাওয়া হবে না মালালার। আপাতত ইসলামাবাদের একটি হোটেলেই কয়েক দিন কাটাবেন তিনি। মালালা ফেরার পরে টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকে। লিখেছেন, ‘এক বিশ্বাসঘাতক দেশে ফিরল।’ উল্টো দিকও আছে। সোয়াটের এক স্কুলশিক্ষক টুইটারে লেখেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েদের কাছে মালালা শিক্ষার প্রতীক। ঘরের মেয়েকে দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।’
"